সাগরের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট পর্যটকবাহী ট্রলার ও ডিঙি নৌকা। গোধূলি লগ্নে পুব আকাশকে পেছনে ফেলে সবাই ছুটছে পশ্চিম আকাশ পানে। সৈকতে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে দেখছেন বছরের শেষ সূর্য, সিঁদুর রংয়ে রাঙিয়ে একটু একটু করে লাল হয়ে ডুবে যাচ্ছে। এমন স্মৃতি ধরে রাখছে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ পর্যটকরা। তবে সফলতা-ব্যর্থতার হিসাব ভুলে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় প্রভাতে নতুন সূর্য দেখার প্রতীক্ষায় তারা।
দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের মঙ্গলবার শেষ বিকালের চিত্র এটি। তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর পর্যটকের সংখ্যা কম বলে জানিয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও থানার পুলিশের সদস্যদের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
আগত পর্যটক ও শিক্ষার্থীরা জানান, এখানে তারা রাত্রিযাপনসহ ভোরের নতুন বছরের সূর্যোদয়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকন করবেন। তাদের মতো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুয়াকাটায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা এসেছেন বছরের শেষ সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে।
স্থানীয়রা জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে ঘিরে সাগরকন্যা খ্যাত এ পর্যটন কেন্দ্রটি সেজেছে নতুন সাজে। হোটেল মোটেলের আঙিনাও রং তুলির আঁচড়ে হয়েছে রঙিন। বছরের শেষ সূর্যাস্ত আর নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয় উপভোগ করতে ছুটে এসেছেন এসব পর্যটক।
দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। একই স্থানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মত বিরল দৃশ্য। রয়েছে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের পাশাপাশি প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, হোটেল-মোটেলের সুবিধা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় কুয়াকাটায় হাজারো পর্যটক ও দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় তিনশ হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। পর্যটক বরণে নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। হোটেল-মোটেলগুলোতে ৬০ ভাগ রুম এরই মধ্যে বুকিং হয়ে গেছে।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার টোয়াক’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসন রাজু বলেন, পুরানো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে আউটডোরে তেমন কোন অনুষ্ঠান না থাকলে কিছু কিছু ভিআইপি হোটেলের ইনডোরে নিজস্ব উদ্যোগ কনসার্টের আয়োজন করেছে। এছাড়া হোটেল হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ রুম বুকিংয়ে ৪০% ছাড় দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পুলিশ সুপার মো.জিয়াউল আহসান তালুকদার জানান, আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর রয়েছি। এছাড়াও পর্যটন জোনগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করাসহ পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা