দেশের বৃহত্তম পর্যটন শহর কক্সবাজার কিন্তু অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কারণে সৌন্দর্য হারাচ্ছে। যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ, সড়কের পাশের ময়লা এবং সমুদ্রসৈকতের ঝাউবনে জমে থাকা বর্জ্য শুধু পরিবেশকে দূষিত করছে না, পর্যটকদের জন্যও অসহনীয় হয়ে উঠছে। বর্জ্য অপসারণে অবহেলা এবং নির্ধারিত স্থানের অভাব শহরের পরিবেশ এবং পর্যটন শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের ক্ষোভ এবং উদ্বেগ এ সমস্যার গভীরতাকে স্পষ্ট করেছে।
অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। যত্রতত্র সড়কের পাশেই দেখা গেছে ময়লার স্তূপ। সুগন্ধা বিচের দিকে যাওয়ার সময় সি ওয়ার্ল্ড হোটেলের সামনে নজরে আসে ময়লার স্তূপ। পর্যটকরা নাকে হাত দিয়ে পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে।
দুপুর ১টায়ও সেই বর্জ্য অপসারণ করেননি পৌরসভার কর্মচারীরা। এদিকে সমুদ্রসৈকতের পাশে থাকা ঝাউবনেও জমেছে ময়লার বিশাল স্তূপ। টানা তিন দিন কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে আবর্জনার এই স্তূপ নজরে আসে। সি ওয়ার্ল্ড হোটেলের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় পর্যটক শরিফুল ইসলামের সঙ্গে।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘পর্যটন শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। অন্যান্য শহরের মতো পর্যটন শহরেও যদি আবর্জনার স্তূপ চোখের সামনে পড়ে তা কারো জন্যই ভালো বার্তা দেয় না।’ তিনি আরো বলেন, ‘অবশ্যই সকাল হওয়ার আগেই শহরের বিভিন্ন স্থানের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা উচিত। পাশাপাশি বর্জ্যের জন্য নির্ধারিত স্থান তৈরি করা উচিত।’
সূত্র জানায়, কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে আবর্জনা ফেলা হয় শহরের নিকটবর্তী কস্তুরীঘাট এলাকায় খোলা আকাশের নিচে।
কস্তুরীঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর ওপর গড়ে উঠেছে ৫৯৫ মিটার পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ, যা ওই এলাকায় পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ব্রিজের এক পাশে ময়লার স্তূপ, অন্য পাশে বেসরকারি মালিকানাধীন খেজুরবাগান, ফিশারিজ প্রজেক্ট, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, চৌফলদণ্ডী ব্রিজ এলাকায় কক্সবাজার বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রও রয়েছে। ময়লার স্তূপের কারণে দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকের দেখা মেলে না। কস্তুরীঘাট এলাকার দৃষ্টিনন্দন বদর মোকাম জামে মসজিদ এলাকায় যেতে পারে না পর্যটকরা।
কস্তুরীঘাট এলাকার এন্ডারসন রোডে তাছনিম হোটেলের সামনে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা হানিফের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পুরো কক্সবাজারের বর্জ্য কস্তুরীঘাটের ময়লার ডিপোতে ফেলা হয়। এ কারণে এই এলাকায় সব সময় দুর্গন্ধ থাকে। স্থানীয় লোকজনের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। উন্নত বিশ্বের মতো দ্রুত বর্জ্য ব্যবস্থপনা করা উচিত। নতুবা পর্যটন শহর একদিন ময়লার স্তূপে পরিণত হবে।’
সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ