বড়দিনের ছুটিতে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের ছুটিতে বুধবার সকাল থেকে এসব পর্যটকদের আগমন ঘটে। আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও থানা পুলিশের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
সমুদ্র সৈকতে সূর্যের দেখা না মেলায় হতাশ আগত পর্যটকরা। এরপরও যেন আনন্দের সীমা নেই। হিমেল হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দিয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে উন্মাদনায় মেতে ওঠে শিশু কিশোর বৃদ্ধসহ নানা বয়সী হাজারো পর্যটক।
এদিকে পর্যটকদের বাড়তি আনাগোনায় বিক্রি বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বুকিং রয়েছে হোটেলের অধিকাংশ কক্ষ। এভাবে পর্যটকের আগমন থাকলে পিছনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, বড়দিনের ছুটিতে সৈকতের জিরো পয়েন্ট, ঝাউবন, গঙ্গামতি, লাল কাঁকড়া চর, শুঁটকি পল্লী, গঙ্গামতির লেক, রাখাইন পল্লী, লেম্বুর বন, তিন নদীর মোহনা, কুয়াকাটার কুয়া, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়ার সীমা বৌদ্ধ বিহারসহ অধিকাংশ পর্যটন স্পট এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে।
হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, হালকা শীতের আমেজ শুরু হওয়াতে কুয়াকাটায় বাড়ছে পর্যটক। বড়দিন উপলক্ষে অধিকাংশ হোটেলে মোটেলগুলো বুকিং রয়েছে। তাদের আশা এখন থেকে এমন পর্যটকদের আনাগোনা থাকলে সংকট কাটিয়ে উঠবে খুব শীঘ্রই।
পর্যটক সায়েম-রুপা দম্পতি জানান, 'এখানের পরিবেশটা বেশ দারুণ লাগছে। সবাই মিলে সমুদ্রে সাঁতার কেটেছি। এ এক দারুণ অনুভূতি। এটা বলে বোঝানো যাবে না।'
আরেক পর্যটক রেজাউল করিম বলেন, বড় দিনের ছুটিতে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণে এসে খুবই ভালো লাগছে। ছেলে মেয়েরা সমুদ্রে গোসল করেছে। ঠান্ডা বাতাস বইলেও সমুদ্রের পানি গরম রয়েছে। তাই তাদের আনন্দের সীমা ছিল না। তবে আকাশ মেঘে ঢাকা থাকায় সূর্যের দেখা পাইনি।'
পর্যটক সারমিন আক্তার বলেন, কুয়াকাটা প্রকৃতি এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য বেশ ভালো লেগেছে। বাচ্চারা বেশ দারুণভাবে উপভোগ করেছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, বিশেষ করে এখন পর্যটন মৌসুম শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন পর এত বেশি পর্যটক দেখে ব্যবসায়ীরাও অনেকটা উচ্ছ্বসিত।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মোতালেব শরীফ জানান, মেঘলা আবহাওয়ার মাঝেও অনেক পর্যটক এসেছে। তাদের অ্যাসোসিয়েশন ভুক্ত হোটেলগুলোর বেশির ভাগই বুকিং রয়েছে। আগত পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে মনিটরিং সেল সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, বড়দিন উপলক্ষে অনেক পর্যটক এসেছে। আগত পর্যটক দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া দর্শনীয় স্পটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ টিম টহল অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমএস