সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে চলতি মৌসুমে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করছেন পর্যটকরা। অতীতে এই ডিসেম্বরে যেখানে ৮-১০টি জাহাজে করে ১০-১২ হাজার পর্যটক প্রতিদিন যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু এবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২ হাজার পর্যটকের অনুমতি মিললেও বাস্তবে তাও যেতে পারছেন না। ফলে ১ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ৮ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন গেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকেই সেন্টমার্টিনে নিয়মিত যাত্রা করছে পর্যটকবাহী জাহাজ। তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুট থেকে জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সেন্টমার্টিনের ব্যবসায়ীরা বলছেন, কক্সবাজার থেকে জাহাজ এসে এক-দুই ঘণ্টার বেশি থাকতে পারছে না। আবার ফিরতে হচ্ছে। তাই যাদের রাতযাপনের সামর্থ্য নেই তারা এখন সেন্টমার্টিনমুখী হচ্ছেন না। বলতে গেলে এখন শুধু জাহাজ ভ্রমণ হচ্ছে।
সেন্টমার্টিনের স্থায়ী বাসিন্দা জাবের জানান, মৌসুম এলে ভ্যান ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস সেন্টমার্টিনে আসেননি কোনো পর্যটক। এতে অনেক কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে তার পরিবারকে। দ্বীপে এখন পর্যটক এলেও তা অতি নগণ্য।
সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ৯ দিনে মোট ৮ হাজার ৫০০ পর্যটক গেছেন দ্বীপে। যা গড় হিসাবে সরকারের নির্ধারিত প্রতিদিনের ২ হাজার জনেরও কম।
হোটেল সি প্রবালের পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর দ্বীপে পর্যটক আসছেন। সরকারের বিধিনিষেধের কারণে অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে হোটেলেও। গতকাল হোটেলে ১০টি রুম বুকিং ছিল। আস্তে আস্তে বাড়ছে পর্যটকের চাপ। আমরা পর্যটকদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করি সব সময়। আশা করি এ মৌসুমের বাকি সময় বেশ ভালো কাটবে। সেন্টমার্টিনে বেড়াতে আসা জুবায়ের বলেন, সেন্টমার্টিনে আসার স্বপ্ন ছিল। এখন দ্বীপে এসে খুব ভালো লাগছে। তবে কক্সবাজার থেকে ছয়-সাত ঘণ্টার ভ্রমণ কষ্টকর হচ্ছে। জাহাজ চলাচল টেকনাফ থেকে হলে খরচ-সময় বাঁচবে এবং আরামদায়ক হবে। এখন দ্বীপের জেটির অবস্থা খুবই খারাপ, সেটিও সংস্কার করা দরকার।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, সরকারের বিধিনিষেধ ও নিয়মাবলি মেনে এখন কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন তিন থেকে চারটি জাহাজ আসছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, আগত পর্যটকরা যেন কোনো হয়রানির শিকার না হন। সেই কারণে জেটিঘাটসহ বিভিন্ন স্পটে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম