হিম শীতল আবহাওয়া। ঠাণ্ডা প্রকৃতি। আবছা কুয়াশার চাঁদরে মোড়ানো সবুজ পাহাড়। গোধূলী রঙে ছড়িয়েছে সজীবতা। এমন পাগল করা পাহাড়ের রূপ বৈচিত্র্যে টানছে পর্যটকদের। তাইতো সাজেকে নিরুৎসাহিত আদেশ প্রত্যাহারের পর রাঙামাটিতে ছুটে আসছে দূর-দূরান্তের পর্যটক। মানুষের আনাগোনায় এখন কানায় কানায় ভরপুর রাঙামাটি ও সাজেক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিবেশ ঠিক থাকলে পর্যটক আগমনের রেকর্ড ভাঙবে পাহাড়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার ও শনিবার রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতুতে হঠাৎ করে নেমেছে মানুষের ঢল নেমেছে। বুকিং ৫০ ভাগ থাকলেও ঝুলন্ত সেতুতে মানুষ ছিল শতভাগ। অর্থাৎ একদিনে তিন হাজার পর্যটক শুধু রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু ভ্রমণ করেছে। শুধু তাই নয়। একই দৃশ্য রাঙামাটি পলওয়েল পার্ক ও ডিসি বাংলো পার্কেও। যেনো তিল ধারনের জায়গাও খালি নেই। নানা বয়সের ছেলে মেয়েদের পদাচরণায় মুখর ছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। কেউ রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে নৌ ভ্রমণ করছে। কেউ মেতেছে প্রকৃতির সাথে ছবি তুলতে। আবার কেউ গানের সুর আর নাচের তালে তালে ছন্দ তুলেছে। বন্ধু-বান্ধব ও নব দম্পতি আত্মীয় স্বজন মিলে আনন্দে উৎসবে পরিনত করেছে ভ্রমণস্থল।
সাজিদা রহমান এসেছেন ঢাকা থেকে। কথা হয় তার সাথে। বলেন, হিমশীতের আমেজে ভ্রমণের নেশা লেগেছে বাতাসে। যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি দূর করতে ছুটে এসেছি পাহাড়ে।
একইভাবে উচ্ছ্বসিত ছিল রায়হান ও মাহামুদ। তারা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ১০ জন বন্ধু মিলে সারাদিন পুরো রাঙামাটি ঘুরে বেড়িয়েছি। অসম্ভব ভালো লাগার জায়গা এ পাহাড়। সারাদিন কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ সত্যি অসাধারণ ছিল।
তাই ব্যস্ত সময় পার করছে ট্যুরিস্ট বোট মালিক ও চালকরা বলেন মো. ফকরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর কিছু কিছু পর্যটক আসছে রাঙামাটিতে। দৈনিক ৫০ থেকে ৭০টাকা বোট ভাড়া হচ্ছে আমাদের। পিকনিকের সময় এসেছে। পর্যটক আগমন আরও বাড়বে আশা করি। অন্যদিকে ব্যস্ততা বেড়েছে রেস্টুরেন্টগুলোতে। মানুষের ভিড় লেগে আছে।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার ক্যাউ চিং মারমা বলেন, প্রায় প্রতিদিন রেস্টুরেন্ট জমজমাট। পর্যটক আসছেন তাই রেস্টুরেন্ট ব্যবসা চাঙা হয়ে উঠেছে।
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশন ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, আমি পর্যটকদের অনিরাপত্তার কিছু দেখছি না। পর্যটকরা এখন আসতে শুরু করেছে। প্রায় প্রতিদিন আগমন বাড়ছে। তবে বিদেশি পর্যটক কমে গেছে। স্থানীয় ও দেশের দূর-দুরান্তের পর্যটক আছে। তাই ৫০ভাগ বুকিং আছে হোটেল ও মোটেল। এছাড়া ঝুলন্ত সেতুতে মানুষের আগম বেড়েছে। তাই রাজস্ব আয় আগের তুলনায় বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। আশাকরি নতুন বছরকে সামরে রেখে পর্যটক আগমন আরো বাড়বে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল