বাংলাদেশে মিঠাপানির একমাত্র জলাবন রাতারগুল। বছরের অর্ধেক সময় বনটি থাকে পানিতে ভাসমান। আর শীতকালে দেখা মিলে বনের নিচের মাটির। বিভিন্ন গণমাধ্যমে রাতারগুল নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের পর গেল কয়েক বছরে বেড়ে গেছে পর্যটক সমাগম। গত সাড়ে ৩ বছরে রাতারগুল জলাবন থেকে প্রবেশ ফি হিসেবে সরকার প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।
রাতারগুল জলাবন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। বিশ্বে মিঠাপানির যে ২২টি জলাবন আছে, তার মধ্যে রাতারগুল অন্যতম। এই জলাবনের আয়তন ৩ হাজার ৩২৫ দশমিক ৬১ একর।
১৯৭৩ সালে বিশাল এই বনের ৫০৪ একর এলাকা বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০১৫ সালের ৩১ মে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর ২০৪ দশমিক ২৫ হেক্টর বনভূমিকে বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা হিসবে ঘোষণা করে।
চিরসবুজ এই বন গোয়াইন নদীর তীরে অবস্থিত। বনটিতে সবচেয়ে বেশি জন্মায় করচ গাছ। এখানকার গাছপালা বছরে ৪ থেকে ৭ মাস পানির নিচে থাকে। তাই প্রতিদিন দেশি-বিদেশি হাজারো প্রকৃতিপ্রেমী ছুটে আসেন রাতারগুলে।
নিয়মিত পর্যটকদের উপস্থিতি লক্ষ করে ২০২০ সালে রাতারগুল পর্যটনকেন্দ্র থেকে রাজস্ব আদায়ের ফি নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। সিলেট বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন রাতারগুল থেকে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা, ১২ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ২৫ টাকা ও বিদেশি নাগরিকদের জন্য ৫০০ টাকা প্রবেশ ফি নির্ধারণ করা হয়।
রাতারগুল সহ-ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাতারগুলে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪১ জন প্রাপ্ত বয়স্ক, ২ লাখ ২৯ হাজার ৮৩ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং ৭৫১ জন বিদেশি নাগরিক প্রবেশ করেছেন।
২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রবেশ ফি থেকে সরকার ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৪০৫ টাকা রাজস্ব আদায় করছিল। বৈশ্বিক করোনার কারণে ওই অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১০৩ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার ৫১ টাকা ও ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর ও ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আয় হয়েছে ৯১ লাখ ৩০ হাজার ৩১০ টাকা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই