রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিমুল নামে স্থানীয় এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। পরিকল্পিত হত্যা আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বিনোদপুর বাজারে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভে স্থানীয় শ্রাবণ হাসান বলেন, ‘শিমুল আমার খুব কাছের বন্ধু। গত রাতে ক্যাম্পাসের ভিতর সময় কাটাচ্ছিল। এ সময় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং শিক্ষার্থীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার এবং প্রক্টরের পদত্যাগ চাই।’ নগরীর মেহেরচণ্ডী এলাকার শামীম হোসেন বলেন, ‘শিমুলের হত্যার সঙ্গে জড়িত যারাই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।’ ২৩ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ভবনের সামনে মেয়ে সহপাঠীসহ বাইক দুর্ঘটনায় মারা যান নগরীর পশ্চিম বুথপাড়ার জামাল হোসেনের ছেলে শিমুল। তিনি রাজশাহী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় মেয়েটি সুস্থ আছেন। তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে অবস্থানকালে একদল পেছনে ধর ধর বলছিল। তখন ও (শিমুল) বলছিল বাইকে ওঠো। এ বলেই নতুন রাস্তা দিয়ে জোরে বাইক চালাতে থাকে। তখন পেছনে একদল ধর ধর বলে দৌড়াচ্ছিল। পাশেই আরেকদল ব্যাটমিন্টন খেলছিল। তারাও ছুটে আসছে। ব্যাট দিয়ে আঘাত করলে দুর্ঘটনা ঘটে।’
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কুদরত-এ-খুদা ও স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের মাঝে মেয়ে সহপাঠীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন শিমুল। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির গাড়ি এলে দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। তখন পেছন থেকে একদল ধর ধর বলে চিৎকার করে তাদের ধাওয়া দেয়। তখন রড বিছানো রাস্তার ওপর দিয়ে দ্রুত বাইক নিয়ে পশ্চিম দিকে পালানোর চেষ্টা করেন শিমুল। সে মুহূর্তে জগদীশচন্দ্র বসু ভবনের সামনে ব্যাডমিন্টন খেলা চলছিল। ফলিত গণিতের কিছু শিক্ষার্থী ছিনতাইকারী মনে করে পথরোধের চেষ্টা করে। তবে এ ভবনের শেষ প্রান্তে রাস্তায় দুই স্তরের রড বিছানো থাকায় ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারান শিমুল। পরে তার জ্ঞান ফেরাতে মাথায় পানি দেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু জ্ঞান না ফেরায় প্রক্টরিয়াল বডি তাকে অ্যাম্বুলেন্সে মেডিকেলে পাঠান। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. গিয়াসউদ্দিন আহমদ ও ড. আবু সাঈদ জুয়েল উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দ্রুত কমিটিকে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।