ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টায় একটি জরুরি সভা ডাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। ঘটনা তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক হোসেন কামাল এবং সহকারী প্রক্টর ড. এ কে এম নূর আলম সিদ্দিকী। এছাড়া, সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল প্রাং কমিটির সদস্য-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে, সকালে চারুকলা অনুষদে সরেজমিনে দেখা যায়, অনুষদের যেখানে মোটিফ তৈরির কাজ চলছিল, সেখানে 'ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি' মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। 'শান্তির পায়রা' মোটিফটিও আংশিক পুড়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল বলেন, ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে। একইসাথে পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে।
তিনি বলেন, আগুনটা ফজরের নামাজের সময় লাগানো হয়েছে। আমরা এর পরেই খবর পাই। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ওটা পুরোটাই পুড়ে যায়। আগুনটা ইচ্ছে করেই লাগানো হয়েছে। তবে কে বা কারা করেছে তা জানা যায়নি। ঘটনাটি ঘটার পরপরই সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, পুলিশের কর্মকর্তারা এসে উপস্থিত হন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে, কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তবে তদন্ত না হওয়ার আগে কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, সেখানে সিসিটিভি রয়েছে। তবে আমরা এখনো ফুটেজ দেখতে পারিনি। দেখলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবো। আমরা শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
উল্লেখ্য, 'নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারকার প্রধান মোটিফ ছিল 'ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি'। ২০ ফুট উচ্চতার রাক্ষসীর ন্যায় আকৃতিটি জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতি বলেই পরিচিতি পেয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নেটিজেনদের কাছে। এটি বানানোর সময় 'নষ্ট করে দেওয়া হতে পারে' বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। প্রশাসনের বাড়তি সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন তারা।
বিডি প্রতিদিন/কেএ