চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির (বার) নির্বাচনে বিনা ভোটে ২১টি পদে নির্বাচিত হচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত ঘরানার আইনজীবীরা। শুক্রবার মনোনয়নপত্র জমা ও যাচাইবাছাই শেষে ওই ২১ জনকে ‘বৈধ প্রার্থী’ হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনাভোটে তারা বিজয়ী হওয়ার পথে। ফলে ১৬ এপ্রিল সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সেই পর্যন্ত অপেক্ষার প্রয়োজন পড়বে না প্রার্থীদের। তবে আওয়ামী ও বাম ঘরানার আইনজীবীদের অভিযোগ, ফরম নিতে বাধা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতের আইনজীবীরা। যার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছে থাকলেও তারা নির্বাচন করতে পারছেন না।
বিএনপি ঘরানার আইনজীবী ও সভাপতি প্রার্থী আবদুস সাত্তার বলেন, ‘কোনো আইনজীবীকে ফরম নিতে বাধা দেওয়া হয়নি। তারা ফরম নিতে না এসে এখন মিথ্যাচার করছেন। যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেছে, তারা এখন এসব কথা ছড়াচ্ছেন। তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়েছে এমন কোনো ডকুমেন্ট থাকলে দিতে বলেন। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এলডিপিও আমাদের জোটে আছে। এলডিপির শাহাদাত হোসেনকে বাধা দেওয়া হয়নি। আমরা মিলে প্যানেল ঘোষণা করেছি, তিনি তো প্যানেলের বাইরে যেতে পারেন না।
আওয়ামীপন্থি আইনজীবী আবদুর রশিদ বলেন, আমরা ফরম আনতে গিয়েছি কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা বাধা দিয়েছেন।
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সভাপতি পদে আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী, সহসভাপতি পদে আলমগীর মোহাম্মদ ইউনূস, সহসাধারণ সম্পাদক পদে মো. ফজলুল বারী, অর্থ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পাঠাগার সম্পাদক পদে তৌহিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে আশরাফি বিনতে মোতালেব, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ম. মঞ্জুর হোসেন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে আবদুল জব্বার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা সবাই আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের। এ ছাড়া ১১টি সদস্য পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আহসান উল্ল্যাহ মানিক, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, হেলাল উদ্দিন, মেজবাহ উল আলম আমিন, মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, মো. রুবাইয়াতুল করিম, মো. শাহেদ হোসেন, মোহাম্মদ মোরশেদ, রাহিলা গুলশান ও সাজ্জাদ কামরুল হোসেন।
চট্টগ্রামের সাধারণ আইনজীবীরা বলছেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবকটি পদে নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা সমিতির ১৩২ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হলে দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি সম্মান থাকে না বলেও মত দিয়েছেন কেউ কেউ। সর্বশেষ চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি। সেই সময় সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ পদে জয় পেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ঐক্য পরিষদ। আর আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সহসভাপতিসহ ৭ পদে জয় পায়। স্বতন্ত্র পেয়েছিল একটি পদ। এবার বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত বাংলাদেশ ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল যৌথভাবে ‘আইনজীবী ঐক্য পরিষদ’ নামে যৌথ প্যানেল ঘোষণা করে।