পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ২১ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার পাথরঘাটা, উত্তরকলতি ও ছোট বিশাকোল গ্রামের এসব হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে ছিল- ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি ছোলা, ১ কেজি চিনি, ১ লিটার তেল, হাফ কেজি বুন্দিয়া, ১ কেজি পিঁয়াজ ও ১ কেজি আলু। বসুন্ধরা শুভসংঘের ভাঙ্গুড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাকিব খানসহ অন্যান্য সদস্যরা গত তিন দিন ধরে এসব খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন।
এতে উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের ৮টি পরিবার, অষ্টমনীষা ইউনিয়নের ছোট বিশাকোল গ্রামের ৭টি পরিবার ও উত্তর কলকতি গ্রামের ৬টি পরিবারের মাঝে এসব খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। খাদ্যসামগ্রী পেয়ে হতদরিদ্র এসব পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত খুশি হন।
পাথরঘাটা গ্রামে বসবাসরত বুড়ি খাতুন জানান, স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে বাবার বাড়িতে বসবাস করেন তিনি। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন। তিনিও স্বামীর বাড়ি ছেড়ে এখন মায়ের সঙ্গে বসবাস করেন। পরিবারে নেই কোনো আয়-রোজগার করার পুরুষ মানুষ। এর ওপর পিত্তথলিতে পাথর হয়ে অসুস্থতায় ভুগছেন তিনি। সম্প্রতি অপারেশন করার কারণে চলাফেরা করতেও কষ্ট হয়। তাই খাদ্য কষ্টে ভুগছেন তিনি ও তার মেয়ে। রোজার মাস উপলক্ষে এই খাবার পেয়ে তার দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও কমল।
উত্তর কলকতি গ্রামের সবুরা খাতুন। বাস করেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে একটি ঝুপড়ি ঘরে। বেশ কিছুদিন ধরে প্যারালাইসড হয়ে শয্যাশায়ী। তিনি অসুস্থতার কারণে পরিষ্কার করে কথা বলতে পারেন না। তার পরিবারেও আয় রোজগার করার মানুষ নেই। চরম খাদ্য সংকটে দিন কাটে তার। তাই তিনি এই খাদ্য সামগ্রী পেয়ে অত্যন্ত খুশি। এক পর্যায়ে আবেগে তিনি কেঁদে কেঁদে সবার মঙ্গলের জন্য দোয়া করেন।
বসুন্ধরা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক শাকিব খান বলেন, ‘পবিত্র মাহে রমজান শুরু হতে চলেছে। এ উপলক্ষে কিছু হতদরিদ্র দুস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। হতদরিদ্রের পাশাপাশি অসুস্থ মানুষকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এই খাদ্যসামগ্রী এসব পরিবারকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ সবসময়ই মানুষের কল্যাণে কাজ করে। এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণও ভালো কাজের ধারাবাহিকতার অংশ।’
ভাঙ্গুড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাহবুব উল আলম বাবলু বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘের ভাঙ্গুড়া উপজেলা শাখার সদস্যরা অনেক মানবিক ও সামাজিক কাজ করে। তাদের প্রত্যেকটা কাজ প্রশংসার দাবি রাখে। এভাবেই বসুন্ধরা শুভসংঘ সমাজ ও মানুষের কল্যাণে ভালো কাজ করে যাবে প্রত্যাশা রইল।’