সৌরভ গাঙ্গুলী যা বলেছিলেন, তার ঠিক উল্টো বলেছেন বিরাট কোহলি, যা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের ‘বিভাজন’ কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কে সত্য কথা বলছেন? খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
গত সপ্তাহে কোহলিকে সরিয়ে একদিনের ক্রিকেটে রোহিতকে ভারতের পুরুষ দলের অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
সৌরভ দাবি করেছিলেন, 'বিসিসিআই এবং নির্বাচকরা মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব না ছাড়ার জন্য বিরাটকে অনুরোধ করেছিল বিসিসিআই। কিন্তু ও সেটায় রাজি হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে সাদা বলের দুটি ফর্ম্যাটে দু'জন ভিন্ন অধিনায়ক রাখাটা ঠিক হবে বলে মনে করেননি নির্বাচকরা।’
বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ দাবি করেছিলেন, একদিনের ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব নিয়ে বিরাটের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি সৌরভ।
যদিও বুধবার সংবাদ সমএমলনে বিরাট দাবি করেন, ‘যখন আমি বিসিসিআইকে বলি যে আমি টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছাড়তে চাই, তখন তা ভালোভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল। কোনোরকম দ্বিধাবোধ ছিল না। আমায় বলা হয় যে এটা প্রগতিশীল পদক্ষেপ। সেই সময় জানিয়েছিলাম যে আমি একদিনের ক্রিকেট এবং টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিতে চাই না। আমার তরফে বার্তা স্পষ্ট ছিল। আমি এটাও জানিয়েছিলাম, বিসিসিআই কর্তা এবং নির্বাচকরা যদি মনে করেন যে অন্য ফর্ম্যাটে আমার নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয়, সেটাও ঠিক আছে।’
পাশাপাশি সৌরভ দাবি করেছিলেন, ‘(সাদা বলের ক্রিকেটে দুই অধিনায়ক না থাকার পক্ষে মতের প্রসঙ্গ ধরে) তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে টেস্ট দলের অধিনায়ক থাকবেন বিরাট। সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের অধিনায়কত্ব করবেন রোহিত (শর্মা)। বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে আমি নিজে বিরাটের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচক প্রধানও তার সঙ্গে কথা বলেছেন।’
সৌরভের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে বুধবার কিছু জানাননি বিরাট। তবে যেভাবে একদিনের ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর ধরন যে ভালো ছিল না, তা স্পষ্ট করে দেন তিনি। বলেন, '(টেস্ট দলের) নির্বাচনের জন্য আমার সঙ্গে দেড় ঘণ্টা আগে যোগাযোগ করা হয়। কোনও কথাবার্তা হয়নি। প্রধান নির্বাচক আমার সঙ্গে (টেস্ট দলের) নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন। ফোন রাখার আগে পাঁচজন নির্বাচক জানান যে আমি একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়ক থাকব না। আমি বলি যে ঠিক আছে।’
এই পরিস্থিতিতে সৌরভের মুখ খোলা উচিত বলে মনে করেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার। তার দাবি, কোহলি এবং বোর্ডের মধ্যে দূরত্ব, এবং কোহলিকে একদিনের নেতৃত্ব থেকে সরানো নিয়ে যে অস্বচ্ছতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সেটা দূর করে দেওয়া উচিত বিসিসিআই প্রেসিডেন্টেরই।
গাভাস্কার বলেন, ‘কোহলির বক্তব্যের সঙ্গে বোর্ডকে অকারণে জড়ানোর দরকার নেই। ও কিন্তু একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে কথাগুলো বলেছে, যে দাবি করেছিল তার সঙ্গে কোহলির কথা হয়েছে। হ্যাঁ, সৌরভ বিসিসিআই সভাপতি। তাই ওকেই জিজ্ঞাসা করা উচিত, কেন দু’জনের কথার মধ্যে অসংগতি রয়েছে। এ মুহূর্তে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ওই সব থেকে ভালো লোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর বিতর্ক যাতে না বাড়ে, তার জন্য স্বচ্ছতা আনা দরকার। নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানের উচিত নিজে এগিয়ে এসে কেন কেউ বাদ গেল বা কেন কাউকে দলে নেওয়া হল, সেটা পরিষ্কার করা উচিত। একটা প্রেস বিবৃতিও জারি করে এর ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ