দেশের বৃহৎ বঙ্গবন্ধু সেতুতে দ্বিতীয় দফায় বেড়েছে যানবাহন থেকে টোল আদায়ের হার। টোল আদায়ের প্রজ্ঞাপনের লিফলেট চালকদের মাঝে বিতরণ করে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর আগে, ১৯৯৮ সালে সেতুটি চালু হওয়ার পর ২০১১ সালে টোল বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায় বৃদ্ধি নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ আনোয়ারুল নাসেরের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপন জারি হলেও বুধবার বঙ্গবন্ধু সেতুতে পারাপার হওয়া যানবাহন থেকে পূর্বে ধার্যকৃত রেটে টোল আদায় করছে কর্তৃপক্ষ। তবে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকেই চালকদের অবহিত করতে তাদের হাতে টোল বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন ধরিয়ে দিচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সেতু বিভাগের আওতাধীন বঙ্গবন্ধু সেতুর জন্য অনুমোদিত যানবাহনের শ্রেণিবিন্যাস এবং টোল হার ধরা হয়েছে মোটরসাইকেল ৫০ টাকা, হাল্কা যানবাহনের মধ্যে কার/জিপ ৫৫০, মাইক্রো, পিকআপ ৬০০, ছোট বাস (৩১ আসন বা এর কম) ৭৫০, বড় বাস (৩২ আসন বা এর বেশি) ১০০০, ছোট ট্রাক (৫ টন) ১০০০, মাঝারি ট্রাক (৫ টন থেকে ৮ টন) ১২৫০, মাঝারি ট্রাক (৮ টন থেকে ১১ টন) ১৬০০ টাকা, ট্রাক (৩ এক্সেল) ২০০০, ট্রেইলার (৪ এক্সেল) ৩০০০, ট্রেইলার (৪ এক্সেলের অধিক) ৪০০০ টাকা এবং সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের জন্য প্রতিবছর ১ কোটি টাকা টোল আদায় করা হবে।
এর আগে, গত ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল বৃদ্ধি করা হয়েছিল। টোল বেড়ে মোটরসাইকেলে ৪০ টাকা, হালকা যানবাহন (কার, জিপ) ৫০০ টাকা, ছোট বাস ৬৫০ টাকা, বড় বাস ৯০০ টাকা, ছোট ট্রাক ৮৫০ টাকা, মাঝারি ট্রাক ১১০০ টাকা, বড় ট্রাক ১২৫০ থেকে ১৪০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সেতুতে টোল আদায় বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পরই মঙ্গলবার রাত থেকে সেতু পারাপার যানবাহনের চালকদের অবহিত করতে একটি লিফলেট দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, টোল আদায় সিস্টেম পরিবর্তন করে নতুন টোল রেট সংযুক্ত করার পর টোল আদায় শুরু হবে।
বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, টোল বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। অতি দ্রুতই নতুন রেটে সেতুতে টোল আদায় শুরু হবে। টোল বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন চালকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ব্যাপক প্রচারের জন্য সেতু কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে এই সংক্রান্ত লিফলেট ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
মাইক্রোবাস চালক রনি মিয়া জানান, টোল বৃদ্ধি করা হলে আমাদের জন্য কষ্ট হয়ে যাবে। কারণ ভাড়া বৃদ্ধি করতে হবে। সাধারণ মানুষ সেটা বুঝতে চাইবে না। জনগণের ওপর এই চাপ পড়বে।
ট্রাক চালক রমজান আলী জানান, টোল বৃদ্ধি হলে পণ্য পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যাবে। এমনিতেই ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সবকিছুই সাধারণ মানুষের ওপর পড়বে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই