বিশ্বজুড়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। শুধু নিজের বিষয়ই নয়, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা, বন্ধুবান্ধবদের নিয়েও সরব তারা। এখন অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্তানদের ছবি পোস্ট করছেন। তাই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেক বাবা-মা-ই বাচ্চার জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা, খাওয়া, গোসল, সবকিছুরই আপডেট দেন, ছবি শেয়ার করেন।
এসব ব্যাপারে মতামত নেয়ার মতো যথেষ্ট বুদ্ধি বিবেচনা শিশুদের থাকে না। পরিবারের সদস্যরাই মূলত কণিষ্ঠতম সদস্যটির এসব আপডেট দিয়ে থাকেন। তবে বাচ্চারা বড় হয়ে এটা নিয়ে যে অস্বস্তিতেও পড়তে পারেন না নিয়ে ভাবেন না তারা। এটা ভাবেন না তাদের নেয়া সিদ্ধান্তের সঙ্গে সন্তানরা বড় হওয়ার পর একমত না-ও হতে পারেন। যা তাদের চোখে ভালো মনে হয়েছে, সেটা সন্তানদের চোখে ভালো নাও লাগতে পারে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, শৈশবে যাদের ছবিতে অনলাইন সয়লাব হয়ে গেছে বড় হওয়ার পর অনেকেই বিষয়টি পছন্দ করছেন না। এক কিশোরী বলেন, '১২/১৩ বছর বয়স থেকে বুঝতে শুরু করলাম ফেসবুকে থাকা কিছু জিনিস বেশ অস্বস্তিকর। বাবাকে সেগুলো নামিয়ে নিতে বললাম। তিনি আনন্দে সঙ্গেই কাজটি করেছেন।' আরেক কিশোরী বলেন, 'ছোটবেলায় এসব দেখে ভালো লাগলেও, এখন তা একেবারেই ভাল লাগছে না।
অভিভাবকরা কী বলছেন? ঢাকার এক বাসিন্দার মতে, সন্তানের ছবি নিজের প্রোফাইলে দেখলে ভালো লাগে। সবার সাথে শেয়ার করলে ভালো লাগে। তবে এটা সন্তানের গোপনীয়তা নষ্ট করতে পারে তা ভাবিনি।
আরেক অভিভাবকের মতে, ছবি সংরক্ষণ করাও সমস্যা। সামাজিক মাধ্যমে অ্যালবাম করে রাখলে ছবির বড় ধরনের ডিজিটাল আর্কাইভও থাকছে। তবে সন্তান বড় হওয়ার পর আপত্তি করলে তখন এগুলো রাখবো না।
তবে সবাই যে সময়ের স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন এমন নয়। অনেকেই এ ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক। এক শিক্ষিকা জানান, অনেকেই বাচ্চাদের গোসলের কিংবা নগ্ন ছবি দিয়ে থাকেন সামাজিক মাধ্যমে। কিন্তু সবার মানসিকতা তো সমান নয়। অনেকসময় এসব ছবি পর্ণ সাইটেও চলে যায়। অধিকাংশ বাবা-মাই সন্তানদের ছবি দিয়ে থাকেন আনন্দ নিয়ে। তবে সেসব ছবি নামিয়ে কেউ তা অন্য কোনও উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে কি-না, তা কে বলতে পারে?
বিডি প্রতিদিন/ ০৩ নভেম্বর ২০১৬/ ফারজানা-০৪