ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গতকাল শুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচে আউটের ধরন নিয়ে হচ্ছে সমালোচনা। প্রশ্ন উঠেছে ম্যাচের দুটি আউট নিয়ে। এই ম্যাচে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে আউট হন শাইনপুকুরের দুই ব্যাটার রহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির। সন্দেহের তীর তাদের আউটকে ঘিরেই।
তাদের আউটের ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়ার পর শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। ক্রিকেটারদের অনেকেই এটাকে বলছেন লজ্জাজনক। সমালোচনা করেছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ইমরুল কায়েসও। তার প্রশ্ন কাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে দেশের পতাকা?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে শাইনপুকুরের ব্যাটার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির উইকেট থেকে বেরিয়ে আসেন বড় শট খেলার জন্য। সেসময় গুলশান ক্লাবের নাইম ইসলাম বলটি ওয়াইড করেন। উইকেটকিপার বল হাতে নিয়ে প্রথম প্রচেষ্টায় উইকেট ভাঙতে ব্যর্থ হলেও পরে চেষ্টায় উইকেট ভাঙেন। ততক্ষণে ব্যাটার সাব্বির একবার লাইনে ব্যাট প্রবেশ করিয়েও তা আবার বের করে ফেলেন। তার এমন আউটের ধরন দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস।
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইমরুল কায়েস তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, আজকে আমি হৃদয় থেকে ক্ষোভ নিয়ে কিছু কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি। মিডিয়া, ক্রিকেটার, সাংবাদিক, ধারাভাষ্যকার-সবাই আজ একটা ঘটনায় স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ। কারণটা খুব পরিষ্কার-ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ যে কাজটা হয়েছে, সেটা শুধু লজ্জাজনক না, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছে।
একটা দলকে সুপার লিগে উঠতে না দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আরেক মাঠে দুই দল নিজেদের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে! এটা কী ধরনের নাটক? আজকের সেই ম্যাচের ভিডিও প্রমাণসহ নিচে রয়েছে-আপনারা নিজেরাই দেখুন, বিচার করুন।
তিনি আরও লেখেন, এই যদি হয় আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবস্থা, তাহলে ভবিষ্যতে জাতীয় দলে কারা খেলবে? কাদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি দেশের পতাকা? যারা মাঠে নামার আগেই ম্যাচের ফয়সালা করে নেয়, তাদের দিয়ে কী দেশের প্রতিনিধিত্ব হয়? লজ্জা! যাদের ব্যবহার করে এসব নোংরা খেলা খেলানো হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, কারণ ওরা আজ নিজেরাই নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছে।
আমরা যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখি, সেই স্বপ্নকে বাস্তব করতে দিনরাত খেটে যাচ্ছি-আর কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ নিজেদের স্বার্থে গোটা দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চেষ্টা করছে উন্নতির। কিন্তু এইসব ঘটনাগুলো সেই চেষ্টাকেও মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে।
ইমরুল কায়েস বলেন, আমি জোরালোভাবে দাবি জানাই-এদের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এই কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত আজকের ম্যাচ বাতিল করে পুনরায় রিশিডিউল করা উচিত।
বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এভাবে শেষ হতে দেওয়া যায় না। আজকে চুপ থাকলে, কাল হয়তো আর কিছু বলার সুযোগ থাকবে না।
বিডি প্রতিদিন/এমআই