দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে ক্রিজে অটল থাকা, প্রতিপক্ষের ব্যাটিং দৃঢ়তার সময় বল হাতে ব্রেক থ্রু এনে দেওয়া। আবার ফিল্ডিংয়ের সময় কখনো কখনো ক্ষিপ্রগতিতে প্রতিপক্ষের জোরালো শট তালুবন্দী করা, কিংবা নিশ্চিত বাউন্ডারি আটকে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে হতাশায় ফেলা। হ্যাঁ, ভারতের জাতীয় দলের বাইরে থাকা যুবরাজ সিংয়ের সম্পর্কে বলা হচ্ছে। হয়তো বর্তমানের সময়ের অনেকেই তার এই কারিশনা নাও দেখে থাকতে পারেন। তবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগে যুবরাজ মানে এমনই সব বিশেষণের কথা অকপটে স্বীকার করে নেবেন যে কেউই। অবশ্য ক্যান্সার জয় করে ফিরলেও মাঠে আর সেভাবে ফিরতে পারেননি। এরপর কয়েকবার দলে সুযোগ পেয়েছেন বটে, তবে আবার খুব তাড়াতাড়ি বাদও পড়েছেন। এখন তো ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ পর্যায়ে ২০১১ বিশ্বকাপের সেরা এই খেলোয়াড়। তবে শেষটা মোটেও স্বস্তির নয় যুবরাজের জন্য। ২০০৭ সালের জুনে সর্বশেষ জাতীয় দলের জার্সিতে তাকে দেখা গিয়েছিল। এরপর প্রায় কেটে গেছে দেড় বছর। অদূর ভবিষ্যতে কোনোদিন জাতীয় দলের দরজা খুলবে কিনা সেটা বলা অসম্ভব। কিন্তু আইপিএলে! যেখানে ফেসভ্যালু না থাকা ক্রিকেটারও বড় অংকের টাকায় দলে জায়গা পান সেখানেও কেন তিনি উপেক্ষিত! শেষ মুহূর্তে দল পেয়েছেন বলে উপেক্ষিত বলাটা ঠিক হবে, কিন্তু তার মতো যুবরাজের পাশে ১ কোটি কি মানানসই?
একটু পেছনে তাকালে দেখা যাবে, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আইপিএলের নিলামে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছিল যুবরাজ সিং। এর মধ্যে ২০১৪ সালে ১৪ কোটি এবং ২০১৫ সালে আইপিএলে সর্বোচ্চ রেকর্ড ১৬ কোটিতে বিক্রি হয়েছিলেন যুবরাজ সিং। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের মাত্র তিন বছর পর সেই তাকে কিনা প্রথমে কেউ কিনতে আগ্রহ দেখায়নি।
অবশ্য এটা হটাৎ করে শুরু হয়নি, ১৬ কোটিতে বিক্রি হওয়ার পরের বছর মাত্র ৭ কোটিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাকে নেয়। তবে তিনি তেমন পারফর্ম করতে না পারলেও ২০১৭ সালে তাকে ধরে রাখে হায়দরাবাদ। পরের আসরে মাত্র ২ কোটিতে তাকে নেয় পাঞ্জাব। তবে এ বছর তার বেস প্রাইস ১ কোটিতে নামলেও প্রথমে কোন দলই টানেনি এ তারকা ক্রিকেটারকে। নিলামের একবারে শেষ মুহূর্তে ভিত্তি মূল্যেই তাকে দলে টানে মুম্বাই। চোখের সামনে জীবনের এমন উত্থান-পতন দুটিই দেখলেন যুবরাজ। এখন দলে জায়গা পান কিনা সেটাই দেখার বিষয়। যদি না পান তাহলে এক যুবরাজের করুণ পরিসমাপ্তি দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব।
বিডি-প্রতিদিন/২০ ডিসেম্বর, ২০১৮/মাহবুব