মৌসুমের প্রথম ‘এল ক্লাসিকোয়’ দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বার্সেলোনার নেইমার-সুয়ারেস জুটির সামনে দাঁড়াতেই পারল না রোনালদোর রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বার্সা ৪-০ গোলের জয়ে জোড়া গোল করেছেন লুইস সুয়ারেজ। এছাড়া একটি করে গোল করেছেন নেইমার ও ইনিয়েস্তা। এ জয়ের ফলে লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে গেল বার্সেলোনা।
শনিবার রাতে রিয়ালের মাঠে শুরুতেই বার্সেলোনার ‘এমএসএন’ ত্রয়ীকে এক সঙ্গে মাঠে দেখা যায়নি। চোট কাটিয়ে লিওনেল মেসি দলে ফিরলেও তাকে বেঞ্চে রেখেই একাদশ সাজান কোচ লুইস এনরিকে। আর গত বেশ কয়েকটি ম্যাচের মতোই আর্জেন্টিনার এই তারকা ফুটবলারের অভাব একেবারেই বুঝতেই দেননি নেইমার-সুয়ারেজ জুটি।
বড় ব্যবধানে জয়ের এই ম্যাচে প্রথম গোছালো আক্রমণটা করেন নেইমার-সুয়ারেজরাই। ৭তম মিনিটে লেফট ব্যাক জর্দি আলবার বাড়ানো বল পেয়ে ডি-বক্সের ভেতর থেকে ব্যাক পাস করেছিলেন সুয়ারেজ। তবে বল পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন নেইমার। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বার্সার। এর ৪ মিনিটের মাথায় সার্জিও রবের্তোর বাড়ানো বল গোল আদায় করে নেই উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড সুয়ারেজ।
ম্যাচের ২৪তম মিনিটে নেইমারকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন হামেস রদ্রিগেস। তবে নেইমারের ফ্রি-কিকটি বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। পরের মিনিটেই ডি-বক্সে রাকিতিচের বাড়ানো বল পেয়েছিলেন রবার্তো, কিন্তু তিনি গোল করতে ব্যর্থ হন।
এক গোলে পিছিয়ে পড়ে মরিয়া রিয়াল ৩৮তম মিনিটে বার্সার রক্ষণে প্রবল চাপ তৈরি করেছিল। তবে পাল্টা আক্রমণে পরের মিনিটেই গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে বার্সা। ইনিয়েস্তার বাড়ানো বল থেকে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে চিলির গোলরক্ষক নাভাসকে পরাস্ত করেন ব্রাজিল অধিনায়ক নেইমার। লিগে এই মৌসুমে তার গোল হলো সর্বোচ্চ ১২টি।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল রিয়াল। মার্সেলো বল নিয়ে এগিয়ে ডি-বক্সের ঢুকে শট নিলেও লাগে সাইড নেটে। ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে রদ্রিগেসের দূরপাল্লার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান ব্রাভো। প্রতিরোধের ইঙ্গিত দেওয়া রিয়ালের আধিপত্য অতটুকুই। এরপরেই আবার ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বার্সা।
৫২তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে নেইমারের বাঁকানো ফ্রি-কিক লাফিয়ে উঠে দারুণভাবে সেভ করেন নাভাস। পরের মিনিটেই ইনিয়েস্তা বল বাড়িয়েছিলেন নেইমারকে। দারুণ ব্যাক ফ্লিকে নেইমার তা ফেরত পাঠান ইনিয়েস্তাকে। ততক্ষণে অনেকটা এগিয়ে যাওয়া বার্সেলোনার এই প্লেমেকার জোরাল শটে উপরের ডান কোণা দিয়ে বল জালে ঢোকান।
ম্যাচের ৫৮তম মিনিটে দারুণ খেলতে থাকা রদ্রিগেসকে উঠিয়ে ফরোয়ার্ড ইসকোকে মাঠে নামান রিয়াল কোচ রাফায়েল বেনিতেস। আর রিয়াল সমর্থকদের উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে রাকিতিচের বদলি হিসেবে প্রায় দুই মাস পর মাঠে নামেন চোট কাটিয়ে ফেরা মেসি। ৬৬তম মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে সুয়ারেস শট নিতে পারেননি। নেইমারের পাস থেকে পরক্ষণেই জোরালো শট নিয়েছিলেন মেসি, তবে গোল হয়নি। দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থেকে মেসির দক্ষতায় যে মরিচা পড়েনি প্রমাণ মিলেছে আরও।
৬৮ মিনিটে গোল শোধের দারুণ একটা সুযোগ এসেছিল স্বাগতিকদের। ডি-বক্সের ভেতর খুব কাছ থেকে রোনালদোর শট দারুণ দক্ষতায় সেভ করেন ব্রাভো। এরপর ৭৪ মিনিটে মেসির বাড়ানো বল থেকে অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে দলকে ৪-০ গোলে এগিয়ে দেন সুয়ারেজ। এরপর আর কোনো গোলের দেখা পায়নি বার্সা। পাশাপাশি ব্যবধান কমাতে পারেনি রিয়াল।
এই জয়ের ফলে ১২ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগার শীর্ষস্থান আরো মজবুত করল বার্সেলোনা। সমান সংখ্যাক ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ২৪।
বিডি-প্রতিদিন/২২ নভেম্বর, ২০১৫/মাহবুব