ভক্তদের মন জয় করার জন্য উদ্দিষ্ট জয়ের চেয়েও বেশি প্রয়োজন 'পারফেক্ট' ফুটবল খেলা। গত মঙ্গলবার সিগন্যাল ইদুনা পার্কে বুরুসিয়া ডর্টমুন্ড যেমনটি খেলল। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রায় ৭০ হাজার দর্শকের সামনে ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে জার্মান ক্লাবটি। এ জয়ে বুরুসিয়া ডর্টমুন্ডের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত না হলেও ভক্তরা মনের আনন্দে গুন গুন করে গান গেয়েই বাড়ি ফিরেছেন। প্রথম লেগে ৩-০ গোলে জয়ের কল্যাণে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
রিয়াল মাদ্রিদ যখন ইদুনা পার্কে পরাজয়টা দেখতে পাচ্ছিল দিব্যদৃষ্টিতে ঠিক সে সময়ই স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে মরিনহোর শিষ্যরা অাঁকছিল নাটকের ট্র্যাজিক দৃশ্য। ইব্রাহিমোভিচের অনুপস্থিতিতে এডিসন কাভানি কিংবা লেভেজ্জিরা প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনকে জয় তো দূরে থাক অন্তত ড্রটাও উপহার দিতে পারলেন না। বিপরিতে ২-০ গোলের জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে নিয়েছে চেলসি। প্রথম লেগে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের মাঠে ৩-১ গোলে হারলেও অ্যাওয়ে গোলের হিসেবে এগিয়ে গেছে চেলসি।
রবার্তো লিওয়ান্দোভস্কি রিয়ালের বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগেই মাঠে নামছেন। এই সংবাদটাই রিয়াল ভক্তদের বুক কাঁপিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। গত মৌসুমে লিওয়ান্দোভস্কির অতিমানবীয় 'চার গোল'ই রিয়াল মাদ্রিদকে সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে দিয়েছিল। পোলিশ এই তারকা কি আরও একবার 'রিয়াল ঘাতক' হয়ে উঠবেন! তার উপর ইনজুরিতে আক্রান্ত ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মাঠে নামতে পারছেন না। তবে ম্যাচ শুরুর পর দেখা গেল রবার্তো লিওয়ান্দোভস্কিকে ঠিকই বৃত্তবন্দী করে রেখেছেন পেপে-রামোসরা। এই ফাঁকে আলো ছড়ালেন জার্মান তারকা মারকো রেয়াস। রিয়াল মাদ্রিদের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া পেনালিট মিস করার কয়েক মিনিটের ব্যবধানেই বুরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে উচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে দেন রেয়াস। ২৪ মিনিটে গোল করে থেমে গেলে রেয়াসকে নিয়ে এতটা উচ্ছ্বাস করার কিছু ছিল না। কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই তিনি যখন ডর্টমুন্ডকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন, আরও একবার রিয়াল মাদ্রিদ দেখছিল 'জার্মান দুঃখ'। রেয়াস তখনই ম্যাচের নায়কে পরিণত হন। ভক্তরা পরের ম্যাচটুকুতে অপেক্ষায় ছিলেন রেয়াসের কাছ থেকে বাড়তি কিছু পাওয়ার আশায়। তবে ততক্ষণে তাদের মন ভরে গিয়েছিল এই জার্মান মিডফিল্ডারের ফুটবল প্রদর্শনীতে। রেফারি স্কোমিনা ম্যাচ শেষের বাঁশিতে ফুঁ দেওয়ার পরই রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। সঙ্গে বোধ হয় কোচ কার্লো আনসেলত্তিও। না হলে কি ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, 'রিয়াল আজ ভাগ্যের জোরেই বেঁচেছে।' এতো চেপে রাখা দীর্ঘশ্বাসই!