দেশের শীর্ষ দুই দল লড়ছে। তারপর আবার ফাইনালে ওঠার ম্যাচ। এমন গুরুত্বপূর্ণ দিনে গ্যালারি প্রায় ফাঁকা থাকলে তা কি মানায়? মঙ্গলবার কুমিল্লা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংস ও ঢাকা আবাহনী মুখোমুখি হয়েছিল। বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপের প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচ। আগে সেমিফাইনালে যারা জিতত তারা ফাইনালে জায়গা করে নিত। অন্যদিকে পরাজিত দলের বিদায় হতো। ১৯৮০ সালে শুরু হওয়া এ আসরে এবারই প্রথম নিয়মের পরিবর্তন ঘটেছে। দুই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন খেলবে কোয়ালিফায়ারে। রানার্সআপরা এলিমিনেটরে। কুমিল্লায় সেই কোয়ালিফায়ারের ম্যাচে ঢাকা আবাহনী টাইব্রেকারে কিংসকে সরাসরি হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়।
হেরে গেলেও কিংসের ফাইনাল খেলার সুযোগ থাকছে। এলিমিনেটর ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে হারায় রহমতগঞ্জ। বিজয়ী দলের বিপক্ষে মঙ্গলবার কিংস খেলবে। যারা জিতবে ফাইনালে আবাহনীর প্রতিপক্ষ হবে। টুর্নামেন্টের আকর্ষণ বাড়াতে নতুন সিস্টেমে নকআউট পর্ব হলো। অথচ কুমিল্লায় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গ্যালারির চেহারা ছিল সত্যিই হতাশাজনক। ময়মনসিংহে রহমতগঞ্জ ও ব্রাদার্সের ম্যাচেও গ্যালারি ছিল ফাঁকা।
কিন্তু বসুন্ধরা আর আবাহনীর ম্যাচে ৫ হাজার দর্শকও হবে না তা কি মানা যায়? যেভাবেই বলি না কেন, ফুটবলে এখন তো দুই দলই দেশসেরা। এই কুমিল্লাতেই মোহামেডান-আবাহনীর ফেডারেশন কাপ ফাইনালে দর্শক উপচে পড়েছিল। কালোবাজারে টিকিটও বিক্রি হয়েছিল। এমনকি চলতি পেশাদার লিগে মোহামেডান বনাম কিংস বা আবাহনী ও কিংসের ম্যাচে প্রচুর দর্শক হয়েছিল।
প্রশ্ন হলো, এবার ফেডারেশন কাপে দুই সেরার লড়াইয়ে দর্শক এত কম কেন? আর স্টেডিয়ামের চেহারা ছিল যাচ্ছেতাই। মনে হচ্ছিল কোনো পরিত্যক্ত ভেন্যুতে ম্যাচ হচ্ছে। বসুন্ধরা আবাহনীর ম্যাচটি এমন সময় অনুষ্ঠিত হলো, যখন হামজা ম্যাজিকে ফুটবল আশার আলো দেখাচ্ছে। এমন উন্মাদনার মাঝেও হাইভোল্টেজ ম্যাচে দর্শক নেই। ম্যাচের দিন শুনে অবাক লেগেছে, কুমিল্লার লোকেরা নাকি জানতেন না ধীরেন্দ্রনাথ স্টেডিয়ামে এত বড় ম্যাচ হবে। অর্থাৎ প্রচারই ছিল না। জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার আবদুল গাফফার বলেছেন, ‘এখানে বাফুফের দায়িত্বহীনতা ফুটে উঠেছে। সত্যি বলতে কি, ফুটবলে সেই সুদিন নেই যে, বড় ম্যাচ হলেই দর্শক ছুটে আসবে। এখানে প্রয়োজন ছিল প্রচারণা। ২/৩ দিন আগে থেকে যদি মাইকিং করা হতো, তাহলে গ্যালারির বেহালদশা থাকত না। বাফুফে সবই জানে। এখন যদি তারা জেগে ঘুমায় তাহলে কি আর করার আছে? বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় প্রতিটি ম্যাচে আশানুরূপ দর্শক হচ্ছে। দর্শক আনতে যা যা দরকার তারা তা করে যাচ্ছেন। আফসোস লাগে গ্রামগঞ্জে খেপ খেলায় দর্শক উপড়ে পড়ে। আর দেশের বড় দুই লড়াইয়ে দর্শক হয় না। বিষয়টি অবশ্যই বাফুফের ভাবা উচিত।