পর্তুগালের বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে।
বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে দূতাবাসে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন এবং রঙিন আলোকসজ্জায় দূতাবাসকে বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়। সন্ধায় দূতাবাস প্রাঙ্গন লাল সবুজের মোহনীয় আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠে।
১৬ ডিসেম্বর সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির সূচনা করেন। পরবর্তীতে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পরিচালিত “শপথ গ্রহণ” অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে একটি সুখী সমৃদ্ধ এবং অসাম্প্রদায়িক “সোনার বাংলা” গড়তে আত্মনিয়োগ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিজয় দিবস উদযাপনের দ্বিতীয় পর্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, রাজনৈতিক দল ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। দূতাবাসে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সিরামিক ম্যুরালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনার পর্বের শুরুতে বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
মহান বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে “বিজয়ের ৫০ বছর” শীর্ষক আলোচনায় আগত অতিথিগণ বাঙালিদের জীবনে মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিকক্ষেত্রসহ সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তার সমাপনী বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ বীরাঙ্গনা মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, একটি আধুনিক, জনমুখী, শোষণ এবং সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই আমাদের বিজয়ের সর্বোচ্চ অর্জন।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতার যে আদর্শ ধারণ করে বাঙালি জাতি মুক্তি সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছিল সেই একই আদর্শ ধারণ করে বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করে চলেছে। বিজয়ের এই অগ্রযাত্রা আগামী ৫০ বছরে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে বিদেশের মাটিতে নিজেদের উন্নত আচরণ আর কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেবার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান তিনি।
আলোচনা পর্বের শেষে বিজয়ের কবিতা পাঠ করা হয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ৫০ বছরের অগ্রযাত্রার উপর ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
পরিশেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গ, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কামনায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন