সৌদি আরবে যথাযথ মর্যাদায় ৪৯তম মহান বিজয় দিবস ২০১৯ উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদ, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেদ্দা, বাংলাদেশ কারিকুলাম ও ব্রিটিশ কারিকুলামে পরিচালিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ রিয়াদ ও জেদ্দা আলাদা আলাদা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করেছে।
সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর শহীদদের স্মরণে অস্থায়ী স্মৃতিসৌদে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসী বাংলাদেশি।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্টপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শুনানো হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত সকল স্তর থেকে দুর্নীতি দূর করার আহবান জানিয়ে বলেন, সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর না করতে পারলে আমরা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারবো না।
দূতাবাসের কার্যালয় প্রধান ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদের উপস্থাপনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান মো. নজরুল ইসলাম, মিনিস্টার আনিসুল হক ডিফেন্স অ্যাটাচি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাঈদ সিদ্দিকীসহ রিয়াদস্থ বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।
এদিকে, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিস জেদ্দায় সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন কনসাল জেনারেল ফয়সাল আহমেদ। পরে প্রবাসীদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভিশন ২০২১ এবং ২০৪১ বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ এবং স্থানীয় আইন মেনে চলতে প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান ফয়সাল আহমেদ।
কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (শিক্ষা ও শ্রম) কাজী সালাহ উদ্দিনের উপস্থাপনায় দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে ওআইসির কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, শ্রম কল্যাণ কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম, কাউন্সিলর মুজিবুর রহমান এবং প্রথম সচিব (পাসপোর্ট) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
কনস্যুলেটের কর্মসূচির মধ্যে ছিলো কোরআন থেকে তেলাওয়াত, বাণী, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কতৃক রণাঙ্গনের স্মৃতিচারণ, অস্থায়ী স্মৃতিসৌদে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কনসাল জেনারেলের বক্তব্য। দুই পর্বের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ৫২ থেকে ৭১ চেতনার বাংলাদেশ শীর্ষক লেজার শো এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৫ এবং ১৬ ডিসেম্বর প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা ১ মিনিট পর্যন্ত কনস্যুলেট ভবনে করা হয় বর্ণিল আলোকসজ্জা।
এছাড়াও জেদ্দা এবং রিয়াদে অবস্থিত প্রতিটি স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন এবং দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ এবং বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে উদযাপন করা হয় মহান বিজয় দিবস।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক