সাধারণত বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলো নানা কারণে সমালোচিত হলেও যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার নাদীম কাদির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তিনি মূলধারার সাংবাদিক, ভিনদেশী দূতাবাসগুলোর প্রেস মিনিস্টার, কর্মকর্তাদের নিয়ে ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিজয় দিবস ও বড়দিন উপলক্ষে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেন দক্ষিণ লন্ডনের এক রেস্তোরাঁয়। বিদেশী এই অতিথিরা প্রাণখুলে আড্ডা দিয়ে উদযাপন করলেন বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসকে। সেই সঙ্গে জানলেন স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর 'মুক্তিযুদ্ধ', 'স্বাধীনাতা' কিংবা 'বিজয়' শব্দগুলো বাংলাদেশিদের কেন এতোটা আবেগপ্রবণ করে তোলে।
অনুষ্ঠানটির আয়োজক নাদীম কাদির মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশিদের জন্য কেবল পরাধীনতার শেকল ভাঙার আনন্দের দিন নয়, এই দিনটি একই সঙ্গে বেদনরিও। কেননা ১৬ ডিসেম্বরের ইতিহাস সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের মানুষকে অকাতরে প্রাণ দিতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে নির্মম ও অমানুষিকক অত্যাচার-নিপীড়ন। তিনি স্মরণ করলেন মুক্তিযুদ্ধে নিজের বাবাকে হারানোর স্মৃতিও।
এরপর একে একে বক্তব্য রাখলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. আবদুল হান্নান, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব সুলতান শরীফ এবং দৈনিক অবজারভারের সম্পাদক জনাব সাঈদ বদরুল আহসান। তাদের কথায় উঠে আসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মমতার পাশাপাশি স্বাধীন বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার গল্প।
কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রিটা পেইন বলেন, বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দেশ হলেও এই প্রথম বাংলাদেশের ত্যাগের কথা জানলাম।
লন্ডন প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি ডেনিস ডোবেল বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে ইতিহাস ধারণ করে এখন উন্নয়নের সিঁড়ি বেয়ে উঠছে এখন মূলধারার মিডিয়ার উচিত সেদিকে নজর দেয়া।
ডিপ্লোমেটিক প্রেস অ্যাটটাচে অ্যাসোসিয়েশন অব লন্ডনের প্রেসিডেন্ট মারিয়া মনটেরি, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক মডেল।
অনাড়ম্বর এই আয়োজনে দুটি বাংলা গানের সঙ্গে লোক নৃত্য পরিবেশন করেন সাবরিনা সুলতানা। খালি গলায় হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল গেয়ে শোনান 'আমি বাংলার গান গাই'।
এছাড়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে হাইকমিশনের প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত স্মরণিকা উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া হয়। স্মরণিকায় লিখেছেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, বিমান মল্লিক এবং নাদীম কাদির।
র্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে ১০ জন অতিথির হাতে তুলে দেয়া হয় বাংলাদেশকে নিয়ে লেখা বই এবং উপহার সামগ্রী।
অনুষ্ঠান শেষ হয় সবার সম্মিলিত সুরে 'জয় বাংলা, বাংলার জয়' গানটির মধ্য দিয়ে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫/ রশিদা