একাত্তরের ঘাতক সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় অবিলম্বে কার্যকর এবং দণ্ডপ্রাপ্ত সকল ঘাতকের সহায়-সম্পদ বাংলাদেশ সরকার বরাবরে বাজেয়াপ্ত করার দাবি উঠেছে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক আনন্দ-সমাবেশ থেকে। এই দুই ঘাতকের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার সংবাদে উৎফুল্ল মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং চট্টগ্রামের প্রবাসীরা জড়ো হন এ সমাবেশে। রাজাকার-ঘাতক সাকা চৌধুরীর চট্টগ্রামের রাউজানে যে বাড়ি রয়েছে সেটিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে পরিণত করার প্রস্তাব দিয়েছেন সমাবেশের বক্তারা।
চট্টগ্রামের সন্তান এবং আওয়ামী লীগ নেতা রাফায়েত উল্লাহ চৌধুরী এ প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেন, কুখ্যাত ফজলুল কাদের চৌধুরী তথা ফকা চৌধুরী রাউজানের হিন্দু জমিদারের বাড়ি ও সমস্ত সহায়-সম্পদ জবর দখল করেছিল। এখন সময় এসেছে ওই বাড়ি ও সমস্ত সম্পদ সরকারের বরাবরে বাজেয়াপ্ত করার। চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নেই। তাই সাকার বাড়িতেই সেটি স্থাপিত হওয়া দরকার বলে উল্লেখ করেন রাফায়েত চৌধুরী। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এবং নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরনবী, প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামাল পাশা মানিক, বিশেষ অতিথি মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা ইসমত হক খোকন।
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ আনন্দ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. আব্দুল কাদির মিয়া এবং পরিচালনা করেন সেক্রেটারি এ টি এম রানা।
আলোচনা শেষে পরস্পরকে মিষ্টি খাইয়ে ঘাতক আল বদর বাহিনীর প্রধানের দ্রুত ফাঁসি দেখার আশা পোষণ করেন সকলে।
এদিকে, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, বোস্টনে বসবাসরত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত প্রবাসীরা সাকা এবং মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড অবিলম্বে কার্যকর করার আহ্বান জানিয়ে ১৮ নভেম্বর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের আন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তুরের অন্যতম শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী ‘জাতীয় বেয়াদব’ সাকা চৌধুরী ও কুখ্যাত আলবদর বাহিনীর প্রধান মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন অগ্রাহ্য করে সুপ্রিম কোর্ট তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালিরা সন্তুষ্ট।’
‘সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে, মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদের ঋণ ভারমুক্ত হলো ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতি আরো একধাপ এগিয়ে গেল। আইনের শাসন নিশ্চিত করতে এ রায় মাইলফলক হয়ে থাকবে’ বলা হয় বিবৃতিতে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ নভেম্বর, ২০১৫/ রশিদা