'দীর্ঘ ৩২ বছরের প্রবাস জীবনে শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে অসংখ্য আমেরিকানের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে। সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে গত ৬ বছর দুই মাস আমি জাতিসংঘে বাংলাদেশের ইমেজকে মহিমান্বিত করতে সক্ষম হয়েছি। এখন বাংলাদেশকে কেউ আর দুর্নীতিগ্রস্থ কিংবা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে অভিহিত করে না। সে ধরনের অবস্থা থেকে বাংলাদেশ এখন সকলের কাছেই উন্নয়ন-অগ্রগতি আর দারিদ্র বিমোচনের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মহাসচিব বান কি-মুনসহ শীর্ষ কর্মকর্তার সকলেই একই ভাষায় বাংলাদেশকে বিশ্ব ফোরামে উপস্থাপন করছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এক নম্বর দেশ হিসেবেও এখন মার্কিন প্রশাসনে বাংলাদেশের খ্যাতি রয়েছে।' নিউইয়র্কে জামালপুর জেলা সমিতির নবগঠিত কমিটির কর্মকর্তাদের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেন এসব কথা বলেন।
চলতি মাসেই ৩৮ বছরের প্রবাস জীবনের ইতি টেনে জন্মভূমি বাংলাদেশে ফেরার প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, 'দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমাকে আমলাতানি্ত্রক জটিলতায় আটকে থাকতে হয়নি। কারণ যে কোনো পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাকে তাত্ক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেন এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশ বিশেষ একটি স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে।'
মোমেন আরো বলেন, 'মমতা দিয়ে, মানবতা দিয়ে, সেবা দিয়ে এমন এক পৃথিবী গড়তে চাই যেখানে শান্তি ছাড়া কিছুই থাকবে না। এজন্য আমাদেরকে রাগ, ক্ষোভ, হিংসা, ঘৃণা ভুলে গিয়ে মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে হবে। আর এ কাজে যদি কারো কোনো ত্রুটি হয় তাহলে তা শোধরানোর জন্য গঠনমূলক পরামর্শ প্রয়োজন। কিন্তু ভালো কাজের প্রশংসা দূরের কথা, ভুল শোধরাতে গঠনমূলক সমালোচনার সংস্কৃতিও নেই বাংলাদেশে। এ জন্য যারা ভালো কাজ করছেন তারা হতাশ হয়ে পড়েন-যা সার্বিক কল্যাণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অন্তরায়।'
১ নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় আজ সোমবার সকাল) জামালপুর জেলা সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয় এস্টোরিয়ার ক্লাব সনমে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রদূত মোমেন। জামালপুর জেলা সমিতি ইউএসএ ইনক'র সভাপতি এডভোকেট মোর্শেদা জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালন করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম হাওলাদার, সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের মিয়া, মো. নাজমুল হক, আবু হায়াত মোস্তফা হেলাল, জামালপুর জেলা সমিতির সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কৃষিবিদ আশরাফুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার খন্দকার আবু মুরাদ, আহমেদ রেজা খান পিপলু, ডা. কামাল (মুকুল) এবং লায়ন্স ক্লাবের ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর মির্জা দুলাল।
অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শাহ মাহবুব, চন্দ্রা রায়, জাকারিয়া আহমেদ রুদ্র আলী আজগর, শাকিলা রুনা, দেলওয়ার কবির লায়ন, সৈয়দ আহমেদ বাবলা। তবলায় ছিলেন সজীব মোদক।
বিডি-প্রতিদিন/২ নভেম্বর ২০১৫/শরীফ