তিস্তা সমস্যা সমাধানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে আলোচনা করতে চায় বাংলাদেশ। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভারত সফরকালেই এই চুক্তির বিষয়ে মমতার সঙ্গে কথা বলতে চান বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে মহান বিজয় দিবসের সমাপনী দিবসে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের আমন্ত্রণে আওয়ামী লিগের বিশ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল দিল্লিতে আসবে। ওই সময় দুই দলের মধ্যে সম্পর্ক ও নেতৃত্ব প্রদানের বিষয়টি কিভাবে আরও সুদৃঢ়, শক্তিশালী করা যায় তা নিয়েই আলোচনা হবে। ওই সফরের প্রাক্কালেই মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করে তিস্তার বিষয়টি আলোচনা হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মমতাকে আমরা শ্রদ্ধার চোখে দেখি। ভারতের সঙ্গে আমাদের আত্মার বন্ধন। আমরা তাঁর কাছ থেকে ইতিবাচক রেসপন্স প্রত্যাশা করছি। এসময় মঞ্চেই পাশে বসা পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে উদ্যেশ্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, তাঁর মাধ্যমেই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে তিস্তা বিষয়ে অবগত করতে চাই। আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই তিস্তা চুক্তির বাস্তবায়ন হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে তিস্তা নিয়ে যে আশ্বাস দিয়েছেন আমরা তার দিকে তাকিয়ে আছি। বাংলাদেশের মানুষও তার আশ্বাসে আশস্ত হয়েছে। আমরা মনে করি সবকিছুই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব। তিনি বলেন, আমাদের উত্তরবঙ্গের মানুষ পানি কষ্টে আছে। শেখ হাসিনার ভারত সফরকালেও নরেন্দ্র মোদি তিস্তা, ফেনীসহ অভিন্ন নদী চুক্তির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমরা চাই বাস্তবসম্মত, ন্যায়সম্মত চুক্তি বাস্তবায়ন হোক’।
বাংলাদেশের মন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘তিস্তার পানি নিয়ে কথাবার্তা চলছে, তবে আমার মনে হয় না কোন বড় ধরনের অসুবিধা হবে। তবে একটাই সমস্যা সেখানে পানি অনেক কমে গেছে’। বাংলাদেশ ও ভারত বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেও অভিন্ন সম্পর্ক কামনা করেন তিনি।
ভারত-বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের জানান, ‘বর্তমান সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব চমৎকার পর্যায়ে আছে। ১৯৭১ সালে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের সূচনা হয়েছিল। মাঝখানে কিছু কিছু টানাপোড়েন হয়েছে, সংশয় ছিল, অবিশ্বাস ছিল। আমি মনে করি ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যে অবিশ্বাস ও সন্দেহের দেওয়াল ছিল সেটা ছিটমহল বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে অবিশ্বাসের দেওয়ালটা ভেঙে পড়েছে এবং সেটা নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পর মিটে যায়। আমরা আশা করছি এই সম্পর্কের আরও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
এদিনের সমাপনী দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি, কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭/মাহবুব