২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং নিউ ক্যালিডোনিয়ার মাঝে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের নির্জন বিস্তারে প্রথম দেখা যায় ভুতুড়ে হাঙর। দমিনিক দিদিয়ের দাগিত নামে এক গবেষক সেটির দেখেছিলেন। নির্জন সমুদ্রে ভুতুড়ে হাঙর দেখে ভয় পেয়েছিলেন। তবে প্রথম গবেষক হিসেবে ভুতুড়ে হাঙরের দেখা পেয়ে দাগিত উচ্ছ্বসিতও হয়েছিলেন।
আনন্দবাজার জানায়, আমেরিকার মন্টেরি বে অ্যাকোয়ারিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা সম্প্রতি যে ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছেন, তা অনেককেই চমকে দিয়েছে। কারণ এই প্রথম গভীর মহাসমুদ্রের নিচে ভুতুড়ে হাঙরের ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য ভিডিও করা সম্ভব হয়েছে। শরীরের ফ্যাকাসে নীল আভায় যেন মৃত্যুর শীতল স্পর্শ, নিষ্পলক চোখে সেই হাড় হিম করে দেওয়া প্রাণহীন দৃষ্টি, সেই ঠিকরে আসা তীক্ষ্ণ নাক আর পৃথিবী থেকে লুপ্ত হয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রাগৈতিহাসিক জীবের মতো সেই চোয়াল- সামুদ্রিক আতঙ্কের প্রতিমূর্তি যেন ধরা পড়েছে সেই ভিডিওতে।
ওয়াশিটন পোস্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের এক গভীর অঞ্চল থেকে ২০০৯ সালে এই ছবি তুলে এনেছিলেন মন্টেরি বে অ্যাকোয়ারিয়াম রিসার্চ ইনস্টিটিইটের গবেষকরা। লনি লুন্ডসেন নামে এক বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়েছিল। সমুদ্রের গভীরতম অঞ্চলে জীবজগতের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণের জন্য সে বছর কয়েকটি চালকবিহীন, রিমোট নিয়ন্ত্রিত জলযানকে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে পাঠিয়েছিলেন গবেষকরা। ক্যালিফোর্নিয়া উপকূল এবং হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাঝখানে প্রশান্ত মহাসাগরের যে বিস্তার, সেই এলাকায় সমুদ্রের এমন কিছু অংশে এই জলযান নামানো হয়েছিল, যেখানে সচরাচর মানুষ পৌঁছায় না। তাই এ এলাকার জীবজগতের তথ্য মানুষের কাছে অনেকটাই অন্ধকারে ঢাকা।
ভুতুড়ে হাঙরের খোঁজ নেয়ার জন্যই যে জলযানগুলি পাঠানো হয়েছিল, তা কিন্তু নয়। কিন্তু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৭০০ ফুট গভীরে গিয়ে ছবি তুলে জলযানগুলি ফিরে আসার পর গবেষকরা স্তম্ভিত হয়ে যান। কারণ সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বার সমুদ্রের গভীরতম অঞ্চলে ভুতুড়ে হাঙরের ভেসে বেড়ানোর ছবি ধরা পড়েছিল ক্যামেরায়।
বিডি প্রতিদিন/১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬/ফারজানা