অসুস্থ থাকলে আমরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেয়ে থাকি। এটাই সাধারণ ঘটনা। আমাদের চিকিৎসা প্রযুক্তি আজ এতো উন্নত যে কিছু মারাত্মক রোগ বাদে প্রায় সব রোগের ওষুধ আমরা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু কেরোসিন ও গ্যাসোলিন যে ওষুধ হিসেবে কাজ করতে পারে তা আজ পর্যন্ত কেউ ভাবতেও পারেননি। তাছাড়া কেরোসিন ও গ্যাসোলিনকে ওষুধ হিসেবে মানতে পারবেন না অনেক ডাক্তারও। কিন্তু এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে চীনে।
চীনের শুইজিয়াং এলাকার চ্যান জেজুন নামের ৭৩ বছর বয়েসী এক ব্যক্তি গত ৪৪ বছর ধরে কেরোসিন ও গ্যাসোলিন পান করে আসছেন ওষুধ হিসেবে।
চ্যান জেজুন চীনে পাথর ভাঙা এবং কাঠের কাজ করে জীবনযাপন করেন। তিনি মাসে প্রায় ৩-৩.৫ লিটার কেরোসিন ও গ্যাসোলিন পান করেন। এ্ই ব্যক্তি ১৯৬৯ সাল থেকে কেরোসিন ও গ্যাসোলিন নিজের শারীরিক অসুস্থতার ওষুধ হিসেবে পান করে আসছেন।
১৯৬৯ সালে তিনি যখন প্রথম অসুস্থ হন তখন তার কাশির জন্য গ্রামের লোকজন তাকে কেরোসিন খাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই থেকে শুরু। প্রথম কাপ কেরোসিন খেয়ে চ্যান অনেক অসুস্থ বোধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে উঠে তিনি নিজেকে অনেক সুস্থ আবিষ্কার করে। এরপর থেকে তিনি একটু বেশি অসুস্থ হয়ে পরলেই কেরোসিন পান করতেন।
২০০১ সাল থেকে তিনি কেরোসিনের পরিবর্তে গ্যাসোলিন পান করা শুরু করেন। কারণ ২০০১ সাল থেকে ইলেকট্রিসিটি তার গ্রামে আসার পর থেকে কেরোসিন অনেক দুর্লভ হয়ে যায়। ধারণা করা হয়, তিনি আজ পর্যন্ত প্রায় ১.৫ টন কেরোসিন ও গ্যাসোলিন পান করেছেন।
২০১১ সালে তাকে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট হসপিটাল অ্যাসোসিয়েটের পরীক্ষার জন্য আনা হয়। হসপিটাল অ্যাসোসিয়েট ফেং ফু চ্যানের দেহে যক্ষ্মা বাদে অন্য কোনও সমস্যা পান নি।
ফেং ফু বলেন, আজ পর্যন্ত চ্যান যত কেরোসিন ও গ্যাসোলিন পান করেছেন তাতে তার শরীরের অনেক মারাত্মক সমস্যা হওয়ার কথা ছিল যা হয়নি। চ্যানের শরীর নিজের ইমিউন সিস্টেমের সাথে কেরোসিন ও গ্যাসোলিন মানিয়ে নিয়েছিল। তা না হলে চ্যানের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারতো।