ঘুমের মধ্যে নাক ডাকেন অনেকেই। বিশেষ করে পুরুষরা। আর এই নাক ডাকায় শান্তির ঘুম অশান্তিতে পরিণত হয় পাশে যিনি শুয়ে থাকেন তার। অবশ্য ঘুমের মধ্যে নাক ডাকায় ব্যস্ত মানুষটি তা টের পায় না। কিন্তু শান্তির এই ঘুম থেকে আপনি আর কোনও দিন জেগে উঠতে নাও পারেন। ঘুমের মধ্যেই আপনার মৃত্যু হতে পারে। ভাবছেন আতঙ্কিত করছি। মোটেই না।
ঘুমের মধ্যে মৃত্যু এক ধরনের রোগ, এর নাম স্লিপ আ্যাপনিয়া। আর নাক ডাকা ঘুমেরই আরেকটি নাম। নাক ডাকার আওয়াজ নাক থেকে বের হয় না, এই উৎস নাক ও গলার মধ্যবর্তী অংশ। সেখানে কোনও কারণে বাতাস চলাচল বাধা পেলে এই ধরনের শব্দ হয়। এই অবস্থা কিন্তু যে কারুর জন্য মারাত্মক। কারণ শ্বাসনালীতে বাতাসের প্রবেশ কম হলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। অক্সিজেনের মাত্রা কমতে কমতে ৬০-এর নিচে নামলেই ঘুমের মধ্যে মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
কলকাতার বিশিষ্ট ইএনটি স্পেশালিস্ট জানিয়েছেন, নাক ডাকার সময় মাংসপেশী শিথিল হয়ে যায়। এ সময় আলজিভ নাক-গলার সন্ধিস্থলকে ঢেকে দেয়। ফলে বাতাস সেখানে ধাক্কা খেতে খেতে ঢোকে। তখন গলা দিয়ে একটা গোঙানি মতো শব্দ বের হয়। এছাড়া গলার ভেতরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমলেও এমন হতে পারে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এজন বৃদ্ধির সঙ্গে স্লিপ অ্যাপনিয়ার সরাসরি যোগ রয়েছে। শরীরে মেদ বাড়ার সঙ্গে গলার ভেতরের মাংসপেশী শিথিল হয়ে শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এতে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পায়। আবার দীর্ঘদিন ধরে শরীরে অক্সিজেন প্রবেশ না করলেও মেদ বাড়তে পারে। পুরো কার্যক্রমটাই দুষ্টচক্রের মতো।
এছাড়াও ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যেস থাকলে এই সমস্যা আরও জটিল রূপ নিতে পারে। স্লিপ অ্যাপনিয়ার ফলে ঘুমে বারবার ব্যাঘাত ঘটে। ফলে দিনে প্রায়ই ঝিমুনীভাব থাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয়, এছাড়াও মাধা ধরে। যৌন অক্ষমতা ও বন্ধ্যাত্বও দেখা দিতে পারে।
তাই নাক ডাকার সমস্যা থাকলে এটাকে মোটেও ছোট করে দেখবেন না, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।