কর্মজীবনের ইদুরদৌড়ে দিশেহারা মানুষ। সময়মতো খাওয়া বা ঘুমটাও হয়ে ওঠে না সবার। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, চলতি পথে নানা রকমের অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, ফাস্টফুড বা অতিরিক্ত রিচ ফুড নির্ভরতার কারণে অনেকেই হজমশক্তির বারোটা বাজিয়ে ফেলেন। ফলে শরীর ক্রমশঃই দুর্বল হতে শুরু করে। দেহে পুষ্টির অভাবে বাসা বাঁধা শুরু করে নানা ধরণের রোগ। এমনকি হজমশক্তি কমে গেলে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে ওজনও। অজীর্ণ খাবারগুলো জমা হয় চর্বি হিসেবে। তবে একটু সচেতনার মাধ্যমেই সুস্থ রাখা যায় দেহের পরিপাকযন্ত্র এবং হজমশক্তি। হাতের কাছেই এমন অনেক খাবার আছে যা আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধিতে রাখতে পারে কার্যকর ভূমিকা।
আদা
আদা হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আদা দেহের টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। আদায় রয়েছে ‘জিনজারোলস’ যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং পরিপাকক্রিয়া দ্রুত করে। সকালে এক কাপ আদা চা এবং রান্নায় আদার ব্যবহার কিংবা কাঁচা আদা খাওয়া পরিপাকযন্ত্র সুস্থ রাখে।
রসুন
দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে রসুনের জুড়ি মেলা ভার। রসুনের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান যেকোন ধরণের ঠাণ্ডা কাশি, ভাইরাল ইনফেকশন দূর করার সাথে সাথে আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও কাজ করে। রান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি কাঁচা রসুন দেহের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী।
বিটরুট
উজ্জ্বল রঙের এই সবজিটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এই সবজিতে রয়েছে বিটাসায়নিন, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। এছাড়া এতে আরও রয়েছে ভিটামিন বি৩, বি৬ এবং ভিটামিন সি, বিটা-ক্যারোটিন যা সবই পরিপাকযন্ত্র, লিভার এবং গলব্লাডার সুরক্ষায় কাজ করে।
ব্রকলি
ব্রকলি অনেকেই খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু নিয়মিত ব্রকলি খাওয়া দেহের জন্য অনেক ভালো। এটি আমাদের দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে এবং হজমে সাহায্য করে। স্যুপ, পাস্তা কিংবা সাধারণ সবজি রান্নায় ব্রকলির ব্যবহার শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে একধাপ এগিয়ে নিতে জুড়ি নেই।
বাঁধাকপি
প্রচুর পরিমানে সালফার সমৃদ্ধ বাঁধাকপি দেহকে যেকোনো ধরণের ক্ষতিকর টক্সিন মুক্ত রাখার কাজে ব্যবহার হয়। বাঁধাকপিতে প্রায় ৬০% পানি থাকায় এটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। যা দেহের সকল ধরণের দূষিত পানি দূর করে হজমশক্তি উন্নত এবং পরিপাকযন্ত্র সুস্থ রাখে।
দারুচিনি
দারুচিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাংগানিজ যা দেহের ফ্যাটি এসিড হজম করতে সাহায্য করে। এবং এটি আমাদের রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। রান্নায় দারুচিনি ব্যবহার আমাদের দেহের পরিপাকযন্ত্র এবং হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক কার্যকরী। এছাড়া দারুচিনি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও মহৌষধ।