প্রথম দেখায় কাউকে ভালোবেসে ফেলা অথবা একসাথে অনেক দিন চলার পর কাউকে মন দিয়ে বসা। এরপর এক পর্যায়ে বিয়ে। ভালোবাসা যেমন পূর্বপরিকল্পনা করে হয় না, তেমনি ভালোবেসে বিয়ে করার পর সে বিয়ের সম্পর্ক ভবিষ্যতে কতটা মধুর বা তিক্ত হবে তাও আগে থেকে জানা সম্ভব হয় না। এতো দিন এটাই জানতো সবাই। তবে এবার বুঝি ভাবনায় একটু পরিবর্তন আসবে। কারণ বিয়ের ভবিষ্যৎ জানতে এবার করা হয়েছে নতুন এক গবেষণা।
স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সম্পর্কে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নির্ধারিত হবে বিয়ের ভবিষ্যৎ। অবচেতন মনের অনুভূতিকে ব্যবহার করে এভাবেই নতুন 'লাভ টেস্ট'-এর আয়োজন ফ্লোরিডা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস ম্যাকনাল্টির।
তিনি দাবি করেন, যাদের পরস্পরের প্রতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক, বিয়ের কিছু সময় পর থেকে তাদের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। আর যারা পরস্পরের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন, তাদের সম্পর্কে মধুরতা বছরের পর বছর একই রকম থেকে যায়।
লাভ টেস্টের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীকে দুটি আলাদা ঘরে বসানো হয়। প্রত্যেককে দেখানো হয় সঙ্গীর ছবি। এরপরই প্রশ্ন। তবে উত্তর নিয়ে ভাবনার কোনো সময় নেই। সঙ্গীর ছবি দেখে যে মনোভাব তৈরি হয়, তার ভিত্তিতেই চটজলদি উত্তর 'হ্যাঁ', 'না', 'সন্তোষজনক' বা 'সন্তোষজনক নয়'- এ। দাবি, এতেই নাকি ধরা পড়ে দাম্পত্য প্রেমের আসল ছবি।
৬ মাস অন্তর ১৩৫ জন দম্পতির উপর চার বছর ধরে এই পরীক্ষা চালানো হয়। প্রথম দিকের পরীক্ষায় যে সমস্ত দম্পতির সমীকরণে নেতিবাচক উত্তর মিলেছে, পরে তাদের সম্পর্কে চিড় ধরেছে। তবে অনেক দম্পতিই সম্পর্কের তিক্ততা প্রকাশ্যে তুলে ধরতে চান না। প্রশ্নকর্তাদের সামনে সুখী দম্পতির ভান করলেও, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সত্যিটা সামনে আসে।
ব্যতিক্রমও আছে। কিছু ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নেতিবাচক দিক ফুটলেও পর মজবুত হয়েছে বহু দম্পতির সম্পর্ক। তবে সে সংখ্যা নেহাতই কম।
সমীক্ষার সাফল্যে আনন্দিত ম্যাকনাল্টি। কিন্তু তার আফশোস, শুধু দম্পতির উপরই এই পরীক্ষায় সাফল্য মিলেছে। হবু দম্পতিদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা সফল হলে, অনেক বিয়ের ভাঙনই রোখা যেত।
তবে বিয়ের আগে যুগলরা যখন নতুন জীবনের স্বপ্নে বিভোর, তখন কি 'লাভ টেস্ট' তাদের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারবে? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।