দুটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদে এক বছরের বেশি আগে মারা যাওয়া দুজন শিক্ষককে বসিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে চলছে রসিকতা ও সমালোচনা। কর্মকর্তারাও এ নিয়ে বিব্রত। সূত্র বিডিনিউজ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সরকারি করা ১৩৫ কলেজের অধ্যক্ষ পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের সংযুক্ত করে গত মঙ্গলবার এ আদেশ জারি করে। সেখানেই দুই মৃত শিক্ষকের নাম আসে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ পদ পাওয়া কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন এবং রংপুরের পীরগাছা কলেজের অধ্যক্ষ পদে নাম আসা কারমাইকেল কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক মোহা. আবদুল মুত্তালিব এক বছরের বেশি আগে মারা গেছেন। পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক প্রফেসর মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী। গতকাল তিনি বলেন, ‘জামাল উদ্দিন স্যার মারা যাওয়ার বিষয়টি পিডিএসে হালনাগাদ করা হয়েছে। স্যারকে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন নিয়ে হাসাহাসি হচ্ছে।’
অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন গত বছরের ১৫ মার্চ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার বাবা। প্রায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া স্বামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের খবরে বিস্মিত হয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের স্ত্রী তাহমিনা বেগম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার প্রাপ্তিগুলো কবরে। আমার স্বামী অসম্ভব মেধাবী ছিলেন। তিনি জানতেন অধ্যক্ষ হবেন, কিন্তু সেই অধ্যক্ষের প্রজ্ঞাপন পেলেন মৃত্যুর দুই বছর পর।’ অন্যদিকে ইতিহাসের অধ্যাপক মোহা. আবদুল মুত্তালিব ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার তাঁদের অধ্যক্ষ পদে সংযুক্তির প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ শাখার উপসচিব মো. মাহবুব আলম। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে সদ্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বদলি হওয়া যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘দেড় শর বেশি সরকারি করা কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদায়নের বিষয়ে আমরা কাজ করেছিলাম। ঈদের আগেই তাঁদের পদায়নের কথা ছিল। অধ্যক্ষ না থাকায় ওই কলেজগুলো শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই অনেকটা তাড়াহুড়া করেই শিক্ষা ক্যাডারের ১৪ ব্যাচের অধ্যাপকদের পদায়ন করা হয়েছে। তবে তথ্য হালনাগাদ না থাকায় হয়তো এ ভুল হয়েছে।’ মৃত শিক্ষকদের অধ্যক্ষ পদে পদায়নের বিষয়টি ‘বিব্রতকর’ বলেও মন্তব্য করেন এ যুগ্মসচিব।