ফরিদপুরে বেপরোয়া গতির একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে বাবা-ছেলেসহ প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৮ জন। এদের মধ্যে অনেকের হাত-পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুরের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের জোয়াইরের মোড় নামক স্থানে। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধারকাজে অংশ নেন ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশের কয়েকটি টিমসহ স্থানীয় জুটমিলের শ্রমিকরা। দুর্ঘটনাটি ঘটে গতকাল বেলা সোয়া ১১টার দিকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোপালগঞ্জের মুকসেদপুর থেকে ছেড়ে আসা ফারাবি এন্টারপ্রাইজের (ফরিদপুর-ব-১১-০০৬৬) একটি দ্রুত গতির লোকাল বাস ঘটনাস্থল জোয়াইরের মোড় এলাকার শরিফ জুটমিলের কাছে এলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আঘাত করে। এ সময় বৈদ্যুতিক খুঁটিটি বাসটির সমানের অংশে ঢুকে যায়। দুর্ঘটনার পর জুটমিলের শ্রমিকসহ স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাবা-ছেলেসহ সাতজন নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ২৮ জন। নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন- ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার শিয়ারকান্দি গ্রামের বাবা জোয়াব সরদার (৬৫), ছেলে ইমান সরদার (৩৫), নগরকান্দা উপজেলার কাঠিয়া বড় গ্রামের দীপা খান (৩৪), লালমনিরহাট জেলার পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের আজিবর (৪৩), ফরিদপুর সদরের চর চাঁদপুর গ্রামের মালতি সরকার (৪০) ও পৌর এলাকার মোল্লাবাড়ি সড়কের ফজিরন নেছা (৬০)। নিহত এক শিশুর পরিচয় জানা যায়নি। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটিতে থাকা যাত্রী ফারুক হোসেন জানান, বাসটি মুকসেদপুর থেকে ছাড়ার পর ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসার পর বাসটির চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে থাকেন। আমরা কয়েক যাত্রী কয়েকবার চালককে নিষেধ করলেও তিনি তা শুনেননি। বেপরোয়া গতির কারণেই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো পাশে গিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিত আঘাত করে। পরে বাসটি রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়।
ঝিনাইদহে ট্রাকচাপায় নিহত-৩ : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর সড়কের কৃষ্ণচন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ডে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর ট্রাকচাপায় দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও চারজন। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন হুসাইন ইসলাম, সাফাউল, লিমন ও সাজু। তাদের কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের আলামপুর গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে লিমন (১৮) যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এবং কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে মেজো খোকার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গত রাত ৮টার দিকে উপজেলার খালিশপুর জীবননগর সড়কের কৃষ্ণচন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ডে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের বাদল রায়ের ছেলে রাজা (১৬) ও কাঠ মঙ্গল রায়ের ছেলে বিধান (২৬)। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে স্থানীয়দের একটি সূত্র জানিয়েছে।
মহেশপুর থানার ওসি মো. ফয়েজ উদ্দিন মৃধা তিনজন নিহত হওয়া ও ঘাতক-ট্রাকটি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার হাসাদহ থেকে আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।