শব্দদূষণে বরিশালের অভ্যন্তরীণ নদনদীতে ইলিশ মাছ কমছে। দ্রুতগতি ও উচ্চ শব্দের নৌযান চলাচল করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
শব্দদূষণ নিয়ে কাজ করা বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, নদীতে শব্দদূষণের কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ইলিশ মাছের প্রজনন ও মাইগ্রেশনে সমস্যা হচ্ছে। বর্তমানে নদীতে কী পরিমাণ শব্দদূষণ হচ্ছে, সেটা এখনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিকল্পনা রয়েছে।
বর্তমানে বরিশালের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নদীতে দ্রুতগতির স্প্রিড বোট, ট্রলার, ইঞ্জিনচালিত নৌকা, লঞ্চ, পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করে। এসব নৌযান থেকে অধিক শব্দ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া প্রায় সব নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। বালু উত্তোলনের সময় নদীর গভীরে শব্দদূষণ হচ্ছে। বালু পরিবহনের বাল্কহেড অনেক গভীরে গিয়ে চলাচল করে। এসব নৌযান থেকেও স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি শব্দ হয়। চলাচলের সময় নদীর পানিতে একটি কম্পন সৃষ্টি হয়। এতে ইলিশ মাছ ভয় পায়। সাগর থেকে নদীতে এসে ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে। তখন দ্বিতীয়বার আর নদীতে ফিরতে চায় না। বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, মেঘনা নদীতে ইলিশ মাছ বেশি আসে। বর্তমানে মেঘনা নদী রাতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের দখলে থাকে। কয়েক শতাধিক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে শব্দদূষণ হচ্ছে। এ ছাড়া বালু উত্তোলনের যন্ত্রের তেল ছড়িয়ে পড়ে নদীতে দূষণ বাড়াচ্ছে। যার কারণে ইলিশ মাছ অনিরাপদ মনে করে নদীতে আসা কমিয়ে দিচ্ছে। শব্দদূষণ নিয়ে এখনো অত গভীরভাবে কাজ করা হয়নি। তবে ইলিশ কমে যাওয়ার পেছনে এটিও অন্যতম কারণ। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন প্রল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. নাসিরউদ্দিন বলেন, বড় বড় আধুনিক ইঞ্জিনচালিত নৌযানের কারণে নদীতে শব্দদূষণ হচ্ছে। এতে ইলিশ মাছ ভয় পাচ্ছে। এটি নিয়ে এখনো বিস্তারিত গবেষণা নেই।
তিনি আরও বলেন, সাগর থেকে নদীতে ইলিশ আসা স্থানগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া, বড় বড় পণ্যবাহী নৌযানের আনাগোনা বেড়ে যাওয়া এবং দূষণের কারণে ইলিশ মাছ নদীতে আসছে না।