আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। নামাজ হলো ফরজ ইবাদত। ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হলো নামাজ। ইমানের পরই যার অবস্থান। কেয়ামতের দিন আল্লাহ বান্দার কাছ থেকে সর্বাগ্রে নামাজের হিসাব নেবেন। হাদিসে বলা হয়েছে, কেউ নামাজের হিসাব সঠিকভাবে দিতে পারলে তার অন্য আমলও শুদ্ধ বলে পরিগণিত হবে। কিন্তু নামাজের হিসাব দিতে গিয়ে কেউ ব্যর্থ হলে বা অশুদ্ধ বলে বিবেচিত হলে তার অন্য আমলগুলোও অশুদ্ধ হবে। কিয়ামতের দিন নামাজের বিষয়ে যারা ইতিবাচক হিসাব দিতে পারবে তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার দেওয়া হবে জান্নাত। আর যারা ব্যর্থ হবে তাদের জন্য জাহান্নামের কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করবে।
নামাজের বিষয়ে পবিত্র কোরআনে অসংখ্যবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রসুল (সা.)-এর হাদিসেও নামাজের বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূরা ত্বোয়া-হার ১৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে : 'আমাকে স্মরণ করার জন্যই নামাজ কায়েম কর।' নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বান্দা মহান স্রষ্টা আল্লাহকে স্মরণ করতে পারে। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে পারে। নামাজের সঙ্গে বান্দাদের অবশ্য আরও কিছু ঐশী নির্দেশ পালন করতেও হুকুম এসেছে। সূরা মায়িদার ১২ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, 'তোমরা নামাজ কায়েম কর, জাকাত দাও, আমার রসুলগণের প্রতি ইমান আন ও তাদের সম্মান কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর, তবে তোমাদের পাপ অবশ্যই মোচন করিব এবং নিশ্চয় তোমাদিগকে দাখিল করিব জান্নাতে, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। ইহার পরও কেহ কুফরি করিলে সে তো সরল পথ হারাবেই।'
উপরোক্ত আয়াতে স্পষ্ট করা হয়েছে, নামাজের পাশাপাশি জাকাত আদায় করতে হবে। রসুলের প্রতি ইমান আনতে হবে। সোজা কথায় আল্লাহ এবং তাঁর রসুলের নির্দেশিত সরলপথে চলতে হবে। যারা আল্লাহ এবং তাঁর রসুলের নির্দেশ অনুযায়ী চলবে তাদের জান্নাতে স্থান দেওয়ার ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, 'নামাজ হলো ধর্মের খুঁটি।' তিনি বলেছেন, যে এই খুঁটিকে বিনষ্ট করে সে যেন ধর্মকেই বিনষ্ট করে ফেলল। ইসলাম নামক ইমারতের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ নামাজ আদায়ের ওপর বান্দার ইহলৌকিক ও পরলৌকিক কল্যাণ যেহেতু নির্ভরশীল, সেহেতু নামাজ আদায়ে আমাদের একনিষ্ঠ হতে হবে। কোনো অবস্থায় নামাজ থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না। আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের তৌফিক দান করুন।
লেখক : ইসলামী গবেষক।