মানব জাতির হেদায়েতের প্রধান উৎস কোরআন ও সুন্নাহ। পার্থিব জীবনের সুখ সমৃদ্ধি ও পরকালীন জীবনের মুক্তির একমাত্র উপায় সামগ্রিক জীবনে কোরআন সুন্নাহর বাস্তবায়ন। এখানে এ কথা বলার সুযোগ নেই, কোরআন সুন্নাহ শুধু ব্যক্তিজীবনে অনুসরণ করলেই হবে। সামাজিক জীবনে, কর্মজীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে এর প্রতিফলন প্রয়োজন নেই। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এ গোটা জিন্দেগী কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী চলাই মূলত ইমান। কোরআন সুন্নাহ অনুসরণ না করলে পার্থিব জীবন হবে সংকটময়। অপরদিকে আখিরাতে ভোগ করতে হবে কঠিন শাস্তি। মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, 'যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা হবে সংকীর্ণ এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উঠাব।' (সূরা ত্বহা : ১২৪) অন্য আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, 'যারা তাঁর (রসুল) আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয় সতর্ক ও সাবধান হোক যে, বিপর্যয় তাদের স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের গ্রাস করবে। (সূরা নূর : ৬৩) আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, এ কিতাব (কোরআন) যা আমি নাজিল করেছি খুব মঙ্গলময়, অতএব তার অনুসরণ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর। আশা করা যায় তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হবে। (সূরা আনয়াম : ১৫৫) সূরা আল ইমরানের ৩১নং আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, 'বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তাহলে আমার অনুসরণ কর। তবে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহকে ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু। মানব জীবনের যে কোনো বিষয়কে কোরআন সুন্নাহর মানদণ্ডে যথাযথ যাচাই করা। তাতে কারও গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এ সম্পর্কে মানবতার নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজের ভাষণে ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা দুটি জিনিস অাঁকড়ে ধরবে, ততক্ষণ তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো আল্লাহর কিতাব, অন্যটি আমার সুন্নাত। উপর্যুক্ত আলোচনায় এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী বাস্তবজীবন পরিচালিত করাই ইমানের মূল দাবি। তাই আমাদের সবার উচিত ইসলামী শরিয়াহ তথা কোরআন সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াসের মাধ্যমে সঠিক আকিদায় পরিচালিত করা। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের তার বিধান যথাযথভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন।
লেখক : গবেষক, প্রাবন্ধিক।