মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি শিরোনামে একটি প্রস্তাব জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাশ হলো ২৭ ডিসেম্বর। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে মুসলিম সম্প্রদায় নিধনে বর্বরোচিত আচরণের সময় থেকে এ যাবত ৩টি রেজ্যুলেশন পাশ হলো সাধারণ পরিষদে। এটি ছিল ৭৪তম সাধারণ পরিষদের ৫২তম বৈঠক।
এই রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দেয় ১৩৪টি দেশ। বিপক্ষে ছিল ৯টি। ভোট প্রদানে বিরত ছিল ২৮ দেশ। মিয়ানমারে বর্বরতা বন্ধে এবং বাস্তুভিটা ত্যাগে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের সসম্মানে নিরাপদে নিজ বসতভিটায় ফিরে যাবার নিশ্চয়তার জন্যে বিশ্ব সম্প্রদায়ে বাংলাদেশের লাগাতার তদবিরের অংশ হিসেবে এই রেজ্যুলেশনও যৌথভাবে উত্থাপন করেছিল ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ নভেম্বর জাতিসংঘের থার্ড কমিটিতে অধিকাংশ সদস্য-রাষ্ট্রের সমর্থনে এই রেজ্যুশেনটি পাশ হয়। পঞ্চম কমিটিতে জাতিসংঘের বাজেট নিয়ে সমঝোতার সময়েই ২৭ ডিসেম্বর মিয়ানমার প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিপ্রায়ে এই রেজ্যুলেশন উপস্থাপন করা হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলের সার্বিক সমর্থনের ব্যাপারটি পুনরায় দৃশ্যমান হলো বলে কূটনীতিকরা মনে করছেন।
একই অধিবেশনে মিয়ানমার পরিস্থিতির ব্যাপারে স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়া পরিচালনা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে অর্থ মঞ্জুরির সর্বসম্মত একটি সিদ্ধান্তও হয়েছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ৩৯/২ রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন তৈরি করেছে। তারই উত্তরসূরি হিসেবে স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়া বিদ্যমান রয়েছে। মিয়ানমার প্রশাসনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালত এবং আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টে চলমান মামলার পাশাপাশি জাতিসংঘে এই রেজ্যুলেশনের গুরুত্ব অপরিসীম উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্বসম্প্রদায়ের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ক্ষেত্রে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা