শিশুদের প্রিয় টেলিভিশন সিরিজ সিসিমপুর এবার শিশুদের জন্য নিয়ে এলো ‘সিসিমপুর অ্যাপ’। ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহায়তায় চলমান ‘আর্লি চাইল্ডহুড ম্যাস মিডিয়া’ প্রকল্পের আওতায় মঙ্গলবার থেকে অ্যাপটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে।
সিসিমপুরের এই ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মটি মোবাইলের গুগল প্লে স্টোরে যেমন পাওয়া যাবে, ঠিক তেমনি ওয়েব থেকেও ব্রাউজ করা যাবে। মোবাইলের গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে ‘সিসিমপুর’ বা ‘sisimpur’ লিখে সার্চ করলে প্ল্যাটফর্মটির দেখা মিলবে এবং ডাউনলোড করা যাবে। অন্যদিকে ওয়েবে বা যেকোনো ব্রাউজারে ঢুকে ‘সিসিমপুর ভিলেইজ’ বা ‘sisimpur village’ লিখে সার্চ করলেও এই প্ল্যাটফর্মটির ওয়েব ভার্সন পাওয়া যাবে।
শিশুদের জন্য সিসিমপুর অ্যাপ হবে সিসিমপুরের সাথে যুক্ত হওয়ার নতুন একটি মাধ্যম। বড়দের সাহায্য নিয়ে শিশুরা এখানে সিসিমপুরের দারুণ সব ভিডিও দেখতে পারবে, গল্প শুনতে পারবে, বই পড়তে পারবে, ছবি আঁকতে পারবে এবং মজার মজার সব খেলা খেলতে পারবে।
আর এভাবে মজায় মজায় সময় কাটাতে পারবে হালুম, টুকটুকি, শিকু, ইকরিসহ সিসিমপুরের বন্ধুদের সাথে। অনেকগুলো স্টেশনের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে সিসিমপুর অ্যাপ। ‘ভিডিও দেখি’ স্টেশনে দেখা যাবে সিসিমপুরের সকল ভিডিও, ‘গল্প শুনি’ স্টেশনে শিশুরা শুনতে ও দেখতে পাবে গল্পের ভিডিও, ‘গল্প পড়ি’ স্টেশনে গিয়ে গল্পের বই পড়তে পারবে, ‘এসো খেলি’ স্টেশনে গিয়ে শিশুরা খেলতে মজার সব খেলা আর ‘পাজেল মেলাই’ স্টেশনে গিয়ে মেলাতে পারবে নানান রকম পাজেল।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে করা হয়েছে একটি বিশেষ স্টেশন ‘সুস্থ থাকি’। এখানে গিয়ে শিশুরা এবং বড়রা পাবে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত ভিডিও, গল্পের বই আর নানান রকম সৃজনশীল কাজ। মা, বাবা এবং শিশুদের যত্নকারীদের জন্য করা হয়েছে আরেকটি স্টেশন, যার নাম ‘মা, বাবা ও যত্নকারীদের জন্য’। এই স্টেশনে থাকবে শিশুযত্ন বিষয়ক নানান রকম তথ্য।
ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট ম্যাস মিডিয়া একটিভিটি, সিসিমপুর একটি চার বছর মেয়াদী প্রকল্প, যার আওতায় নতুন ১০৪টি নতুন এপিসোড, জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন, ৪০টি গল্পের বই ও এই ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে।
ইউএসএআইডি-এর উন্নয়ন লক্ষ্য; গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রসার, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবর্তন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো বিষয়গুলো শিশুদের উপযোগী করে উপস্থাপন করা হয়েছে সিসিমপুরের এসব আয়োজনে।
সিসেমি ওয়ার্কশপ সম্পর্কে
“সিসেমি ওয়ার্কশপ” একটি অলাভজনক শিক্ষামূলক সংগঠন যার পেছনে রয়েছে “সিসেমি স্ট্রিট” নামের অনুষ্ঠান, যা টেলিভিশনকে শক্তিশালী শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ১৯৬৯ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সিসেমি ওয়ার্কশপ এমন একটি উদ্ভাবনী মাধ্যম যা শিশুদেরকে অনেক বেশি সম্পন্ন, সবল ও সদয় হয়ে উঠতে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি ১৫০টিরও বেশি দেশে শিশুদের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও জনসেবামূলক কর্মসূচি বা প্রকল্প চালু রেখেছে, এই সকল উদ্যোগ বা প্রকল্প বিভিন্ন অঞ্চল বা জনগোষ্ঠীর চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা হয়। আরও তথ্যের জন্য ভিজিট করুন-sesameworkshop.org
সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ সম্পর্কে
সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ (এসডব্লিউবি), সিসেমি ওয়ার্কশপ-এর একটি শাখা অফিস, যা সিসিমপুর নামে টেলিভিশন অনুষ্ঠান তৈরি করে থাকে। এটি বিশ্ববিখ্যাত টেলিভিশন প্রোগ্রাম সিসেমি স্ট্রিট-এর বাংলাদেশি সংস্করণ। বাংলাদেশি শিশুদের শিক্ষাগ্রহণকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হচ্ছে। আরও তথ্যের জন্য ভিজিট করুন-sisimpur.org.bd
ইউএসএআইডি সম্পর্কে
১৯৭১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে বাংলাদেশকে আট’শ কোটি ডলারেরও বেশি উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করেছে। ২০১৯ সালে ইউএসএআইডি বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে প্রায় বিশ কোটি মার্কিন ডলার প্রদান করেছে। ইউএসএআইডি বাংলাদেশে যে সকল কর্মসূচিতে সহায়তা প্রদান করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রসার, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুবিধাদির সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসেবার উন্নয়ন ও অভিযোজন এবং স্বল্প কার্বন উন্নয়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে আমেরিকান সরকার প্রায় ৭ কোটি মার্কিন ডলার বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সহায়তা দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই