রাত পোহালেই ছেলে আশিকের দাখিল পরীক্ষা শুরু। সকালে নিজে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন-ছেলেকে একথা বলে রাতে ঘুমাতে যান যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের দৌলতদিহি গ্রামের মাসুদুর রহমান। কিন্তু সকাল হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
বাবাকে হারিয়ে বিপর্যস্ত আশিক অশ্রুসিক্ত নয়নে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায়। পরীক্ষা শেষ করে বাবার জানাজায় অংশ নেয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার বাবার মরদেহ দাফন করা হয়। আশিক সদর উপজেলার কাশিমপুরের মিরাপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র এবং চুড়ামনকাটি ছাতিয়ানতলা কে আই আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার বাবা মাসুদুর রহমান একজন ব্যবসায়ী। চুড়ামনকাটি বাজারে তার একটি জুতার দোকান আছে।
আশিকের প্রাইভেট শিক্ষক রাব্বি হাসান জিহাদ বলেন, আশিক মেধাবী ছাত্র। তার বাবার মৃত্যু খবর পেয়ে সকালে তিনি তাদের বাড়িতে যান। বাবার মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই সে ভেঙে পড়ে। পরে তিনি নিজেই আশিককে সাথে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
ছাতিয়ানতলা কে আই আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রের সচিব মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে আশিক। পরীক্ষার পুরোটা সময় তার মন খুবই খারাপ ছিল। বিষয়টি খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও তাকে মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা দিতে বলেছিলাম। শিক্ষকরা তার দিকে আলাদাভাবে খেয়াল রেখেছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, পরীক্ষা শেষ করে আশিক বাড়িতে ফিরলে সেখানে হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে সেখানে উপস্থিত সবাই অঝোরে কেঁদেছেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ