কুড়িগ্রাম পৌরসভার বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১৩টি পদে জনবল নিয়োগ আদেশ বাতিল করে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. ফারুক হোসেন। চিঠিতে এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পৃথক দুটি চিঠিতে পৌর মেয়র আব্দুল জলিলকে পদ থেকে অপসারণ ও পৌর সচিব এসএম রেজাউল করিমকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে মর্মে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত রিপোর্টের এ তথ্য জানা গেলে কুড়িগ্রামে তোলপাড় শুরু হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে নিয়োগ ও বাছাই কমিটির সভাপতি কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র আব্দুল জলিলকে মেয়রের পদ হতে কেন অপসারণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছেন।
একইভাবে অপর এক চিঠিতে নিয়োগ ও বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও কুড়িগ্রাম পৌরসভার সচিব এসএম রেজাউল করিমকে চাকরি হতে কেন বরখাস্ত করা হবে না তা পত্র প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে পৌরসচিব এসএম রেজাউল করিম মন্ত্রণালয় থেকে বরখাস্ত সংক্রান্ত চিঠি রবিবার পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে জবাব দিয়েছি। নিয়োগে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। অসাবধনতা বশত এ নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ না করায় মন্ত্রণালয় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি দেয়।
পৌর মেয়র আব্দুল জলিল জানান, চিঠি পেয়ে সোমবার ই-মেইলের মাধ্যমে এবং মঙ্গলবার ডাকযোগে মন্ত্রণালয়ে কারণ দর্শানো পত্রের জবাব দিয়েছি। পত্রে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছি।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালে পৌরসভার দায়িত্ব নিয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সকল বিধিবিধান মেনে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব ছিলেন পৌরসভার সচিব। এছাড়া জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখভাল করেন। সরকারি আইন-কানুন তাদের জানবার কথা। তাদের অবহেলা ও খামখেয়ালির কারণে অনিচ্ছাকৃত ভুলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ করা যায়নি। অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে পরীক্ষার ফলাফলে দ্বিতীয় হন মুক্তিযোদ্ধার কন্যা মোনালিসা বেগম ঝুমুর। কিন্তু পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। মোনালিসা বেগম ঝুমুর পরে অভিযোগ দাখিল করলে এ পদে নিয়োগের জন্য ঢাকাস্থ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে পত্র পাঠানো হয়। গত প্রায় এক বছরে অনুমোদন মেলেনি। অনুমোদন পেলে এই মুক্তিযোদ্ধা কন্যাকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে।
মেয়র আব্দুল জলিল আরো জানান, একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক সদ্য নিয়োগকৃত ১৩ কর্মচারীর বরখাস্তের আদেশ ২৭ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই