প্রতিটি উদ্যেগ কিংবা ব্যবসায় ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন এখন সময়ের দাবি। আগে যেকোন উদ্যেগে ফল পেতে অনেক সময় লাগতো। কিন্তু ডিজিটাইজেশনে সেটা অনেক তড়িৎ হয়। ফলে কর্মসংস্থান বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সিস্টেম। দেখা যাচ্ছে কোন প্রতিষ্ঠান ডিজিটাইজড হলে সেখানে কর্মসংস্থান বেড়ে যাচ্ছে। তবে একই ধরণের কাজ হয়ত সেখানে থাকছেনা। পুরনো কাজের ধরণ বদলে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কাজ। ঠিক এভাবেই ডিজিটাইজেশনের সুফল এবং নিজেদের সময়োপযোগি করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন মো. সাফায়াত আলী চয়ন। তিনি একজন এমসিআইএম, একজন আধুনিক মার্কেটার, ব্যবসায়িক কৌশলবিদ এবং বর্তমানে কর্মরত আছেন এসিসিএ বাংলাদেশ এ।
কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাইজড করা যায় এ প্রশ্নে তিনি সহজ করে বলেন, কোন অফিসে ডিজিটাইজেশন করা মানে হল ঐ অফিসকে পেপারলেস করা। অর্থাৎ অফিসে কোন কাগুজে ফাইল না থাকা। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ডিজিটাইজেশন বলতে বুঝি আমাদের যাবতীয় কাজের প্রক্রিয়াগুলোকে আসলে ডিজিটালে রূপান্তরিত করা। আজকের দিনে যেসব প্রতিষ্ঠান তার সার্বিক ব্যবসায়িক অপারেশগুলো যেমন প্ল্যানিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের অনুমোদনের ডকুমেন্টেশন করে কাগজ-কলমে। কাজগুলো ডিজিটাইজেশনের জন্যে তারা সেটা কাগজ কলমে না করে ডিজিটাল ভার্সনে করবে।
উদাহরণ দিয়ে বললে, ডিজিটাইজেশনে প্ল্যান, বাজেট সবই তৈরি হবে ডিজিটাল মাধ্যমে। প্ল্যান হবে গুগল ডকে, যা কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেয়ার করা থাকবে। সেই লাইভ ডকুমেন্টটায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইনপুট দেবেন। তারপর ইমেইলের মাধ্যমে সেটা তাদের কাছে পাঠানো হবে। সেটি রিসিভ করে সবাই প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেবেন। এবং সেটাই ফাইনাল ডকুমেন্ট হিসেবে থাকবে। ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট সেটার কপিতে থাকবে। তারাও রিয়েল টাইমে অনুমোদনের বিষয়টি জানতে পারবে। পরে সে অনুযায়ী ব্যাংক বা সাপ্লাইয়ারের সঙ্গে কথা বলে অর্ডার প্লেস করবে। কাজ শেষে বিল পরিশোধ করবে। এখানে দেখা গেল পুরো ব্যাপারটাতে কোন ফিজিক্যাল কাগজপত্রের দরকার পড়লো না।
করোনা মহামারির শুরুতে বিশ্বের নানা দেশে অনেকে হোম অফিসে কাজ করেছেন। বাংলাদেশেও হোম অফিস চালু করে অনেক প্রতিষ্ঠান। এদেশের হোম অফিসের অভিজ্ঞতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যদি এসিসিএর কথাই বলি, আমরা যাদের সঙ্গে কাজ করি তাদের কেউ বসে আছেন ইউএই, কেউ লন্ডনে, কেউ আছেন শ্রীলংকাতে। আমরা তাদের সঙ্গে রোজকার কাজগুলো অনলাইনেই করি। ইমেইল অথবা মাইক্রোসফটের ডকুমেন্টের কাজগুলো করে ফেলছি, মাক্রোসফট টিমে মিটিং করছি। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে যখন হোম অফিসের বিষয়টা এলো তখন আসলে এটা আমাদের কাছে নতুন কোন বিষয় ছিলনা।
ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশের সম্ভাবনা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সাফায়াত আলী চয়ন বলেন, বাংলাদেশে ৩০ বছরের কমবয়সী তরুণের সংখ্যা বেশি। এটা দেশের জন্য ইতিবাচক। যখন কোন দেশে এই বয়সীদের সংখ্যা বেশি হয়, তখন ধরে নিতে হয় তাদের মধ্যে প্রযুক্তি গ্রহণের সম্ভাবনা বেশি। বয়স্কদের নতুন জিনিস গ্রহণ করতে জড়তা কাজ করে। কিন্তু তরুণরা সহজে নতুন বিষয়গুলোতে অভ্যস্থ হয়। বলা যায়, আমাদের কর্মশক্তি যেটা আছে তাদের অধিকাংশেরই সেটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া খুবই সহজ। এই জায়গা থেকে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল-অন্তরা কবির