রংপুরের মিঠাপুকুরে জমিজমার কাগজপত্র ঠিক করে দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করলেও পুলিশ ধর্ষকদের গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো মামলা তুলে নিতে ওই গৃহবধূকে হুমকি দিচ্ছে ধর্ষকরা। তাদের অব্যাহত হুমকির মুখে ওই গৃহবধূ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে পৃথক আরেকটি ঘটনায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মুরাদপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের কাছে ৫ বছর আগে ৬৬ শতক জমি ২ লাখ টাকায় বন্ধক নেন গৃহবধূ ও তার স্বামী। ওই সময় লিখিত স্ট্যাম্পও করে দেন তোফাজ্জল হোসেন। ওই সম্পত্তি গৃহবধূ ও তার স্বামী ভোগদখল করে আসছেন। ১০ নভেম্বর জমিদাতা তোফাজ্জল হোসেন আরও ৪০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন তাদের কাছে। কিন্তু, স্ট্যাম্প করে দিতে টালবাহানা করতে থাকেন।
একপর্যায়ে তোফাজ্জল হোসেনের সহযোগী আবু তাহের ও রবিউল হাসান বিষু ওই গৃহবধূকে ৪০ হাজার টাকার স্ট্যাম্প লিখে দিতে সহায়তার কথা বলে ২ লাখ টাকার মূল স্ট্যাম্পটি তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেন। এরপর তোফাজ্জল হোসেনের সহযোগী আবু তাহের ও রবিউল হাসান বিষু ওই গৃহবধূকে কৌশলে ২২ নভেম্বর ও ২৭ নভেম্বর ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়।
ওই গৃহবধূ বৈরাতীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করলে জড়িতরা ইউপি সদস্যকে হাত করে তার মাধ্যমে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রাম্যভাবে সমাধান করার আশ্বাসে থামিয়ে রাখেন। কিন্তু অপরাধীরা ঘটনার স্থানীয়ভাবে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ওই গৃহবধূকে দুশ্চরিত্রা বলে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে ওই গৃহবধূ মিঠাপুকুর থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
অপরদিকে উপজেলার বড় হযরতপুর ইউনিয়নের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জানা গেছে, ছাত্রীটি গত ২৫ ডিসেম্বর সকালে অন্য শিশুদের সাথে বাড়ির বাইরে খেলা করছিল। পাশের বাড়িতে শিশুটি পানি খাওয়ার জন্য পাশের বাড়িতে যায়।
এসময় পাশের সেরুডাঙা খামার গ্রামের দুলু মিয়া (৪৫) শিশুটিকে পেছন থেকে জাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। তার চিৎকারে অন্য শিশুরা দৌড়ে এলে দুলু মিয়া পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। তবে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান জানান, গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় তিনি বলেন, মামলার একমাত্র আসামিকে ধরতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চলছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর