রংপুরের শ্যামপুর চিনিকলে প্রায় ২০ হাজার চাষি চুক্তিবদ্ধ হয়ে এবার প্রায় সাড়ে ৬ হাজার একর জমিতে আখ চাষ করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ৭৫ কোটি টাকার ওপর। আখ কাটার সময় পেরিয়ে গেছে একমাস আগে। কিন্তু চিনি কল এবার আখ মাড়াই করবে না এমন ঘোষণায় চাষিরা ক্ষেত থেকে আখ কাটেনি।
এই আখ আর সপ্তাহ দুয়েক ক্ষেতে থাকলে এর গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে। এদিকে চিনি কল চালু রাখার দাবিতে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বুধবার শ্যামপুর চিনিকল এলাকায় আধাবেলা হরতাল ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এবং আখচাষী কল্যাণ সমিতির ডাকা হরতালে সমর্থন জানিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সমর্থন জানান।
শ্যামপুরের আখ চাষি মনজিল প্রায় ১ একর, জাহাঙ্গীর হোসেন প্রায় ৫ একর, এমদাদুল প্রায় ৪ একর জমিতে আখ চাষ করেছে। তারা জানান, চিনি কল বন্ধের সিদ্ধান্তে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনিশ্চয়তার কারণে জমি থেকে আখ কাটতেও পারছেনা। এই আখ আর কিছুদিন জমিতে থাকলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
তারা জানান, তাদের আখ জয়পুর হাট চিনিকলে বিক্রি করতে বলা হয়েছে। সেখানে আখ বিক্রি করছে ৬ মাসের আগে আখ মাড়াই হবে না। এতে আখের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া টাকা কিভাবে পরিশোধ করা হবে তার কোন সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা আসেনি। তাই তারা জয়পুরহাট চিনি কলে তাদের আখ বিক্রি করবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে চিনি কল চালু রাখার দাবিতে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শ্যামপুর এলাকায় ধর্মঘট পালন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চিনি কল আখ চাষি শ্রমিক কর্মচারি সংগঠনের সভাপতি সুলতান মাহাদুদ সাধারণ সম্পাদক বুলু অমিন প্রমুখ।
দাবি আদায় না হলে রেলপথ, রাজপথ অবরোধসহ আরও কটোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে আন্দোলন থেকে জানানো হয়। ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে রাজপথ, রেলপথ অবরোধসহ কঠোর আন্দোলন করা হবে জানানো হয়।
শ্যামপুর আখ চাষি ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আন্দোলন থামাতে পুলিশ আমাদের বাধা দিচ্ছে। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। যেকোনো মূল্যে মিল চালু রাখার আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বিডি প্রতিনিধি/আবু জাফর