রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) আমজাদ হোসেন বলেছেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দূরত্ব কমিয়ে আনতে দ্রুতগতির ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। একই সাথে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ আগামী মাসের মধ্যে চূড়ান্তভাবে কাজ শুরু হবে’। তাছাড়া চট্টগ্রামের চুয়েটে রেললাইন নির্মাণ কাজ, কালুরঘাট সেতুসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়নমুলক কাজ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রামে রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মোঃ আমজাদ হোসেনের সাথে সাংবাদিকদের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জিএম) মো. আবদুল হাই, প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান, বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) জোবেদা আক্তার, সিনিয়র ওয়েলফেয়ার কর্মকর্তা আবু খালেদ চৌধুরী। তাছাড়া সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. মহিউদ্দিন, সুজিদ সাহা, ইফতেখার, নয়ন বড়ুয়া, বিপ্লব, সুজন, জয়নাল, বাবু, আহাদ বাবু, পার্থ, মনছুর, টুটুল, সোয়েব, আতিক, শফিক ও সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় মহাপরিচালক (ডিজি) আমজাদ হোসেন বলেন, কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাটে একটি এক্সট্রা ডোজট টাইপ ব্রিজ তৈরি করা হবে। রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প পদির্শনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কক্সবাজারকে ঘিরে রেলওয়ে অবকাঠামো উন্নয়নে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে বেশকিছু প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলকে সামনে রেখে পণ্য পরিবহনের প্রয়োজনে রেলওয়ে লাইন সম্প্রসারণ, কোচ ও ইঞ্জিন আমদানির পরিকল্পনা করছে।
কালুরঘাট সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঢাকা-সহ সারাদেশ থেকে সরাসরি কক্সবাজারে দ্রুতগামী ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এতে রেলের আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের পর্যটন অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে। রেলওয়ে ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ১৪০ কিলোমিটার গবিবেগের রেলপথ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।
মহাপরিচালক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ থাকায় রেলের লোকবল সংকট তীব্র। এর উপর নতুন নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু করায় কাঙ্খিত সেবা প্রদান কঠিন হয়ে পড়েছে। এরপরও রেলওয়ে ইতোমধ্যে ইঞ্জিন সংকট কাটাতে ৭০ লোকোমোটিভ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কোচ আমদানির পর ইঞ্জিনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে রেলওয়ে বর্তমান অবকাঠামো দিয়ে দ্বিগুণ যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় আমজাদ হোসেন আরও বলেন, সর্বশেষ অর্থবছরে রেলওয়ে আগের বছরের চেয়ে ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করেছে। চলতি অর্থবছরে রেলের আয় ২ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রেলের অবকাঠামো উন্নয়ন বজায় রাখার পাশাপাশি খরচ কমিয়ে কাজ করলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে রেলওয়ে আবারো লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে আশা করছেন তিনি। এর আগে তিনি সল্টগোলা রেলওয়ে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এমপির সাথে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পরে বিকাল ৫টার ট্রেনের ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়ে যান।
বিডি প্রতিদিন/২২ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল