জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড। এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮২.৯৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৪১ জন শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এবার চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে এক হাজার ২৭৪টি বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৮ হাজার ৯৬২ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। তবে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২ লাখ ৫ হাজার ৮৭১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৩৪ জন।
মঙ্গলবার ফল ঘোষণা করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ। তিনি বলেন, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ, খাতা মূল্যায়নে আন্তরিক হওয়ার নির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সংখ্যা বাড়ার কারণে জেএসসির ফলাফলে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
নগর ও জেলায় পাশের হার বিষয়ে বলেন, সাধারণত নগরের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেলার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পান। ফলে জেলার চেয়ে নগরের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা বেশি থাকে। তাছাড়া রাঙামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ির পার্বত্য এলাকার অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেকে দারিদ্রতার কারণে সন্তানদের পড়াশোনার সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারেন না। শিক্ষকদের সবাই প্রশিক্ষিত না। ফলে সেখানে পাসের হার কিছুটা কম থাকে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলা স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, দ্বিতীয় হয়েছে ডা. খাস্তগীর স্কুল, তৃতীয় হয়েছে বাওয়া স্কুল, চতুর্থ হয়েছে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং পঞ্চম হয়েছে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল।
চট্টগ্রাম নগর-জেলায় পাসের হারে পার্থক্য
এবার বেশি পাস করেছে চট্টগ্রাম নগরীর বিদ্যালয়গুলো থেকে। নগরীতে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। যা বোর্ডের গড় পাসের হারের চেয়ে ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে সবচেয়ে কম পাস করেছে রাঙামাটি জেলার বিদ্যালয় থেকে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা। তাদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। যা বোর্ডের গড় পাসের হারের চেয়ে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং চট্টগ্রাম নগরের পাসের হারের চেয়ে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ কম। তাছাড়া বাকি জেলাগুলোর মধ্যে বান্দরবান জেলার বিদ্যালয় থেকে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। যা বোর্ডের গড় পাসের হারের চেয়ে ৩ দশমিক ১৬ শতাংশ কম।
খাগড়াছড়ি জেলার পাসের হার ৮০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। যা বোর্ডের গড় পাসের হারের চেয়ে ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ কম। তবে ব্যতিক্রম কক্সবাজার জেলার। চট্টগ্রাম নগরের চেয়ে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ কম হলেও বোর্ডের গড় পাসের হারের চেয়ে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি।
পিইসি পরীক্ষায় চট্টগ্রামে ৯৭ শতাংশ পাস
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় (পিইসি) চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৯৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ ও ইবতেদায়ী পরীক্ষায় ৯৫ দশমিক ২০ শতাংশ। বেলা ২টার দিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এবার পিইসিতে প্রথম হয়েছে বাঁশখালী উপজেলা, ২য় রাউজান ও ৩য় পটিয়া উপজেলা। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৩ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ১৪৩ জন। এ বছর পিইসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ হাজার ৫৩২ জন। ইবতেদায়ােিত মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৪ হাজার ৯২২ জন। পাস করেছে ২৩ হাজার ৭২৬ জন। প্রথম হয়েছে বাঁশখালী উপজেলা, দ্বিতীয় কোতোয়ালি ও তৃতীয় ডাবলমুরিং থানা। এবছর ইবতেদায়িতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৯৯ জন।
বিডি প্রতিদিন/সাইদুল/আরাফাত