মুক্তিযুদ্ধের বই পড়বে। দেশের ইতিহাস জানবে। ইতিহাস বিকৃতি থেকে রক্ষা করবে বঙ্গবন্ধু আর মুক্তিযুদ্ধকে। এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছিল হাজারো শিক্ষার্থী।
বই পড়ার এই উৎসবে শামিল হওয়া সকল শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচিত বই। প্রতিবারের মতো এই বইপড়া উৎসবের আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ইনোভেটর’। বেলা ২টা থেকে সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতে থাকেন শহীদ মিনারে। নিয়ম অনুযায়ী করেন রিপোর্টিং। রিপোর্টিং শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা তুলে দেন ইনোভেটরের সদস্যরা। এরপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বিজয়ে সুবর্ণ আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে ‘বিশ্বের বিস্ময়’-এ পরিণত করার জন্য বই নির্ভর সমাজের বিকল্প নেই। তাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে বই পড়ুয়ারা। বই চির অমলিন, বইয়ের ক্ষমতা কখনো হারায় না। বক্তারা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে দেখা ‘উন্নত বাংলাদেশ’ এর স্বপ্নকে সার্থক করে তুলতে যে প্রজ্ঞাদীপ্ত প্রজন্মের প্রয়োজন ইনোভেটর সেই প্রজন্মকে নির্মাণ করছে। বর্তমান সময়ের প্রধানতম সমস্যা-ধর্মীয় উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার প্রভৃতি থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন মননশীলতার বিকাশ। ইনোভেটর তরুণদের হাতে বই তুলে দিয়ে সেই সৃজনশীল সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ইনোভেটরের মূখ্য সঞ্চালক ও সিটি কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেবজিৎ সিংহ, আরটিএম আল-কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবির।
আলোচনা সভার পর বইপড়া উৎসবে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের হাতে এ বছরের নির্বাচিত গ্রন্থ, স্কুল শাখায় মুনতাসীর মামুনের উপন্যাস ‘জয়বাংলা’ এবং কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় শওকত আলীর উপন্যাস ‘যাত্রা’ তুলে দেয়া হয়। এবারের আসরে মোট ৯৯১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তার মধ্যে স্কুল ও সমমানের মাদ্রাসা পর্যায়ের ৫৩৫ জন এবং কলেজ, স্নাতক ও সমমান মাদ্রাসার ৪৫৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সাল থেকে ইনোভেটর বইপড়া উৎসবের আয়োজন করে আসছে। গত দুটি আসর থেকে এ উৎসবকে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে জেলা পরিষদ, সিলেট।
বিডি প্রতিদিন/এএম