শীতের শুরুতেই সিলেটে বাড়তে শুরু করেছে করোনার দাপট। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। আইসিইউতে রোগীর চাপ বেশি। এ কারণে বাড়ছে আতঙ্কও। পাশাপাশি দ্বিতীয় দফা করোনার ওয়েব মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে আরো একটি আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সিলেটে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজারের কাছাকাছি। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৫০ জন।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। অথচ এর আগের এক সপ্তাহে মারা যান মাত্র একজন। ফলে সিলেটে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। শীত যত বাড়বে করোনার মাত্রা সিলেটে আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। তারা দুইজনই সিলেট জেলার বাসিন্দা। বিভাগে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১৮৭, সুনামগঞ্জে ২৫, হবিগঞ্জে ১৬ ও মৌলভীবাজারে ২২ জন। সিলেট বিভাগে গতকাল করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরো ৪১ জন। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ২৯, সুনামগঞ্জে ৪, হবিগঞ্জে ৪ ও মৌলভীবাজারে ৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৯২৪। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ৮ হাজার ৬৬৯, সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৪৮৪, হবিগঞ্জে ১ হাজার ৯২২ ও মৌলভীবাজার জেলায় ১ হাজার ৮৪৯ জন। সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩১ জন। তারা সবাই সিলেট জেলার ২৯ ও মৌলভীবাজার জেলার ২ জন। এই ৩১ জনকে নিয়ে সিলেট বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৩ হাজার ৭১৭ জন। এরমধ্যে সিলেটে ৭ হাজার ৯৯৫, সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৪২০, হবিগঞ্জে ১ হাজার ৫৭৯ ও মৌলভীবাজারে ১ হাজার ৭২৩ জন। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সিলেট জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪৪ জন করোনা রোগী। অন্য জেলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী নেই।
সিলেটের করোনা হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানিয়েছেন, তার হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে ক্রিটিক্যাল রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ বেড রয়েছে। এরমধ্যে ১৪টিতেই রোগী ভর্তি থাকে সবসময়। সবমিলিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল পর্যন্ত তার হাসপাতালে ৪০ জনের মতো করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন বলে জানান তিনি। সিলেটে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবুও মানুষ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। ইতিমধ্যে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। অভিযান চালিয়ে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন সিলেট নগর ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে তারা সক্রিয় রয়েছেন। যারা আইন মানছে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে, করোনা মোকাবিলায় সিলেটে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হচ্ছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল জানিয়েছেন, এখনো আমরা আতঙ্কিত নয়। আমাদের পর্যাপ্ত সাপোর্ট রয়েছে। শামসুদ্দিন হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন স্থাপন করা হয়েছে। সুতরাং প্রস্তুতির কোনো কমতি নেই। সিলেটে অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত