মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। দীর্ঘ ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের নানা উপাদান আজও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে লোকচক্ষুর আড়ালে। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অসীম বীরত্ব দেখিয়ে যারা অর্জন করেছেন রাষ্টীয় খেতাব-‘বীরশ্রেষ্ঠ’, ‘বীরউত্তম’, ‘বীরবিক্রম’ কিংবা ‘বীরপ্রতীক’। তাদের বীরত্ব গাথা আজ প্রায় স্মৃতির অতলে। তাদের অনেকে বেঁচে থাকলেও তাদের যথার্থ পরিচয় ইতিহাসের আড়ালেই থেকে গেছে। এ আমাদের চরম দুর্ভাগ্য।
বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধে অসীম বীরত্ব প্রদর্শনের সেই যুদ্ধ-কাহিনী সন্ধান এবং পাঠকের কাছে তুলে ধরাই বর্তমান গ্রন্থের মূল প্রতিপাদ্য। বীরউত্তম খেতাব কেবল সেনাবাহিনীর যোদ্ধারাই পাননি, পেয়েছেন বেসামরিক যোদ্ধাদের অনেকে। আছে ব্যতিক্রম, একজন পেয়েছেন পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে বাঁচানোর চেষ্টায় স্বাধীন বাংলাদেশের কতিপয় বিপথগামী সেনাদের হাতে শহিদ হয়ে। আছে ভিন্নতর ঘটনা। বাতিল করা হচ্ছে ‘বীরউত্তম’ খেতাব প্রাপ্ত দু’জনের খেতাব। নিরপেক্ষ নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপিত এসব তথ্য-উপাত্ত পাবেন এক মলাটের ভেতরে; ইতিহাসের বাস্তবতা যার মূল ভিত্তি। ভবিষ্যৎ গবেষকদের জন্য এ এক আকর-গ্রন্থ। শিক্ষক, ছাত্র বা একজন সাধারণ পাঠক সকলের জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ একটি সংগ্রহ এই বইটি।
সুপা সাদিয়া ২০ বছরের অধিক সময় ধরে লিখছেন। তিনি নিয়মিত পত্রিকায় কলাম লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণাধর্মী বই প্রকাশ করে চলছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ গণিত শিখি (২০০৫-০৬), স্মরণীয় দিনপঞ্জি (২০০৭), বায়ান্নর ৫২ নারী (২০১১), ৭১ এর একাত্তর নারী (২০১৪), অগ্নিযুগ (২০১৭), বীরশ্রেষ্ঠ কথা (২০১৯), মুক্তিযুদ্ধে শত শহিদ বুদ্ধিজীবী (২০২১)। অবিরাম লিখছেন বিচিত্রসব বিষয় নিয়ে।
সুপা সাদিয়ার জন্ম বরিশাল ১৯৮০। ২০০৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে গণিতে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ। ২০১৮ সালে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) থেকে বেসিক জার্নালিজমের ওপর সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন। বর্তমানে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর জনসংযোগ বিভাগের প্রধান।
২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান ঘোষক। বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ মহিলা সমিতিসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সদস্য। ১৯৯৫ সালে মনোরমা মাসিমা শিক্ষাবৃত্তি লাভ। ২০১৮ গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য “এডুকেশন ওয়াচ’’ পুরস্কার লাভ। ২০১৯ মুক্তিযোদ্ধার ‘চিঠি’ লেখা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী।
বিডি প্রতিদিন/এমআই