ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ অনার্স (স্নাতক) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তৃতীয় দিনে জালিয়াতির দায়ে একজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই ভর্তিচ্ছুর নাম ইন্দ্রজিৎ কুমার। সে সিপনা খাতুন নামের এক ভর্তিচ্ছুর রোল ব্যবহার করে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধরা পড়ে। আটককৃত ইন্দ্রজিৎ মাগুরা সদর উপজেলার অজিত কুমার বিশ্বাসের ছেলে।
রবিবার আইন ও শরীয়াহ অনুষদভুক্ত ‘এইচ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে ১২৫ নং কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা যায়, রবিবার দিনের ৩য় ও ৪র্থ শিফটে আইন ও শরীয়াহ অনুষভুক্ত ‘এইচ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় চতুর্থ শিফটের পরীক্ষার পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে ১২৫ নং কক্ষের পরিদর্শক অধ্যাপক ড. ভুপেশ চন্দ্র ইন্দ্রজিৎ এর ওএমআর শিট স্বাক্ষর করতে গিয়ে অসংগতি দেখতে পায়। ওএমআর শিট ও প্রবেশ পত্রের রোল নম্বরে ভিন্নতা দেখতে পান তিনি। প্রবেশ পত্রে ইন্দ্রজিৎ এর রোল নং ০৬৬৬২ কিন্তু সে ওএমআর শিটে ০০৯০৩৯ পূরণ করে। তবে সেটি মূলত সিপনা খাতুন নামের এক শিক্ষার্থীর।
পরিদর্শক অধ্যাপক ড. ভুপেশ চন্দ্র তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমাকে জানান। প্রক্টর সেখানে গিয়ে তাকে আটক করেন। আটক করার পর জিজ্ঞাসাবাদে সে জালিয়াতির বিষয়টি শিকার করে।
ইন্দ্রজিৎ এর ভাষ্যমতে, সিপনা খাতুন তার কলেজ সহপাঠি। সে সিপনার রোল নম্বর ব্যবহার করে পরীক্ষা দিচ্ছে। এছাড়া তার ছবি সম্বলিত আরো কয়েকজনের প্রবেশ পত্র ইন্দ্রজিৎ এর ফাইল থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পাবলিক পরীক্ষাসমূহ অপরাধ আইন ১৯৮০ এর ৩ ধারা মতে ইন্দ্রজিৎকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কুষ্টিয়া ডিসি অফিসের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলাম কমল এ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহকারি প্রক্টর নাসিমুজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ, সহকারি পুলিশ সুপার নুর, ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ প্রমুখ।
এদিকে ওই ঘটনার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক রুবেল ইসলামের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। ইন্দ্রজিৎ এর ফোন লিষ্ট চেক করে তার সম্প্রিক্ততার বিষয়টি নিশ্চত করেছেন প্রক্টর ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘অপরাধীদের ধরতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনভাবে অপরাধীরা নিরাপত্তার বলয় ভেদ করে বেরিয়ে যেতে পারবে না। তারই অংশ হিসেবে অপরাধীকে আটক করে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/৩ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল